নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
টলিপাড়ার নক্ষত্ররা কি আদতে উপগ্রহ?- কেমন হল প্রশ্নটা? আজ এতদিন পর যাঁরা কাজে ফিরলেন তাঁদের বিরুদ্ধে এমন উক্তি কি কাম্য? আরও বিতর্কিত প্রশ্ন করে ফেলা হল হয়ত। তবে, এমন তো কিছু নিশ্চয়ই ঘটেছে যে ‘ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা’র একদল বর্তমান ও প্রাক্তন গবেষক এমন প্রশ্ন তুললেন বাংলার বিনোদনজগত তৎসহ বাংলা সংবাদ মাধ্যমের অভিভাবক দাবি করা বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি হল, ‘ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা’র বর্তমান এবং প্রাক্তন ১১ জন গবেষক মিলে তৈরি করেছিলেন শর্ট ফিল্ম ‘খিচুড়ি’ বা ‘খিচড়ি’। গবেষক যোগরাজ ব্যানার্জি এবং তাঁর সতীর্থ গবেষকদের বক্তব্য, ” আজ যখন আমরা সবাই এই কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন, তখন দিকে দিকে চলছে কর্মী ছাটাই। জমানো টাকায় পড়েছে টান। এই সময়ে দাঁড়িয়ে চাল-ডাল মিশিয়ে খিচুড়ি বানিয়েও খেয়ে নিচ্ছেন অনেকে। কখনও তা সুস্বাদু, কখনও আবার স্বাদহীন। আমাদের জীবনটাও ঠিক এইরকম। কখনও ভাল আবার কখনও মন্দে ঘেরা। ঠিক যেমন, এখন আমরা ভাল নেই কেউ, এই করোনার কারণে।তাই এই ‘খিচুড়ি’ কনসেপ্ট’টাকে নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম আমরা। আমাদের ছবিটি ইউটিউবে রিলিজ করে ২৮ এপ্রিল। ভাল সাড়া পাই আমরা।
অভিযোগকারী গবেষকদের শর্টফিল্ম
এরপর ৫ জুন হুবহু একই শর্ট ফিল্ম নজরে পড়ে বাংলার প্রথম সারির অন্যতম সংবাদপত্র আনন্দবাজারের প্রযোজনায়। তার নামও ‘খিচুড়ি’। আমাদের কনসেপ্টের সঙ্গে হুবহু মিল সেই শর্ট ফিল্মের। এমনকী পোস্টারেও রয়েছে মিল! সাদৃশ্য রয়েছে ট্যাগলাইনের সঙ্গে পোস্টারে। একইভাবে চিত্রনাট্য এবং সংলাপেও আছে মিল।
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত টেলিভিশন অভিনেতা জগেশ মুকাতি
আনন্দ বাজার পত্রিকা প্রয়োজিত শর্টফিল্ম
একটা কথা আমরা প্রায় প্রত্যেকেই জানি, অন্য কোনও ছবির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে কোনও ছবি বানালে কিংবা কোনও ছবি পুনরায় বানানো হলে তার জন্য অ্যাকনলেজমেন্ট দেওয়ার দরকার পড়ে। আনন্দবাজার তা তো দেয়ইনি, উপরন্তু আমরা দেখার পর যখন ওদের পেজ-এ কমেন্ট করি তখন সেই কমেন্ট গুলোও মুছে ফেলা হয় বা ট্যাগ ত্যাগ করা হয়। আমরা অবাক। প্রথম সারির এক খবরের কাগজের নিবেদনে এহেন রচনা চুরি!
আরও পড়ুনঃ বন্ধ হল ‘বাঘ বন্দি খেলা’
বলা বাহুল্য, প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম তাই সেই শর্ট ফিল্মে রয়েছেন বাংলা বিনোদনজগতের তাবড় তাবড় তারকারা। রয়েছেন শান্তনু মৈত্র, জোজো, মীর, রূপম ইসলাম, ঊষা উত্থুপ, প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, পল্লবী চ্যাটার্জি, রিচা শর্মা, তনুশ্রী চক্রবর্তী। আমাদের বক্তব্য, এই তারকাদের কি নিজেদের কোনও আলো নেই? যা দিয়ে তাঁরা নিজেরা আলোকিত হতে পারেন?”
গবেষকদের তরফ থেকে সংবাদপত্রের কাছে রচনাচুরির ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কোনও উত্তর দেয়নি। এতে গবেষকেরা বেশ বিরক্ত হয়েছেন। তাঁদের দাবি, একজনের কাজের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আরেকজন কাজ করতেই পারে তাতে ‘সৌজন্যে’ কথাটা লিখতে আপত্তি কোথায়? না জানিয়ে এহেন চৌর্য প্রবৃত্তিকে ধিক্কার জানিয়েছেন তাঁরা।
নিউজফ্রন্ট বাংলার কাছে গোটা ব্যাপারটা জানিয়ে খোলা চিঠি দিয়ে তাঁরা লিখেছেন, “ঐতিহ্যবাহী সংবাদপত্র হয়ে কীভাবে তারা এমন রচনা চুরিকে অনুমোদন করল ভাবতেই পারছি না। আমরা আমাদের বক্তব্য নিয়ে তাদের কাছে পৌঁছতে চেয়েও পৌঁছতে পারিনি। আমাদের উপেক্ষা করা হয়েছে। আনন্দবাজারের প্রতি গবেষকদের অনুরোধ, ” যদি মেধাকে সম্মান না করতে পারেন তা হলে ফি বছরে ঘটা করে বিজ্ঞানীদের সেরা বাঙালির পুরস্কার দেওয়ার প্রহসন বন্ধ করুন।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584