নিজস্ব সংবাদদাতা,মুর্শিদাবাদঃ
করোনা কবলিত পশ্চিমবঙ্গে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। প্রত্যেকদিন মানুষকে এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচানোর যেমন আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ। তেমনই মানুষকে সুরক্ষা দিতে করোনার সঙ্গে প্রত্যহ লড়ে চলেছেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরাও।
সম্প্রতি এরকমই এক করোনা যোদ্ধাকে হারিয়েছি আমরা। সপ্তাহ দুয়েক আগে মাত্র আটত্রিশ বছর বয়সে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়ের। হুগলির চন্দননগরে কর্মরত ছিলেন তিনি। লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছনোর দায়িত্ব সামলেছিলেন ২০১১ সালের ব্যাচের ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক দেবদত্তা।একই ব্যাচ ছিল বছর সাঁইত্রিশের মাসুদুরেরও।
মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সৈয়দ মাসিদুর রহমানের বাড়ি আসলে কলকাতা লাগোয়া বেহালায়। ২০১১ ব্যাচের এই ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন চন্দননগরের প্রয়াত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়ের সঙ্গে। তখন থেকেই নিবিড় বন্ধুত্ব ছিল দুজনের।
আরও পড়ুনঃ করোনা উপসর্গ থাকা ধৃতদের জন্য ‘আইসোলেশন লকআপ’-র পরিকল্পনা পুলিশের
নিজেদের পরিবার ও কাজে ব্যস্ত থাকলেও যোগাযোগ ছিল অটুট। সেই বন্ধুত্বে ছেদ পড়ে দেবদত্তার মৃত্যুতে। যদিও বন্ধুকে ভুলতে নারাজ মাসিদুর সাহেব। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহিদ সেই বন্ধু দেবদত্তা রায়ের নামে রঘুনাথগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের বিডিও নিজের বাংলোর নাম রেখেছেন ‘দেবদত্তা’।
আরও পড়ুনঃ সাংসদ শতাব্দী রায়ের বাবা করোনা পজিটিভ, আক্রান্ত বেলেঘাটায় ২৫ নার্স- স্বাস্থ্যকর্মীও
মাসুদুরের কথায়, ‘‘কোভিড লড়াইয়ের সৈনিক দেবদত্তা। এই লড়াইয়ে ও আমাদের অনুপ্রেরণা।’’ কিন্তু বাংলো তো সরকারি! এক দিন অন্যত্র বদলি হতে হবে বেহালার যুবককে। তখন তো দেবদত্তার নাম সেখান থেকে মুছে যেতে পারে। মাসুদুরের বক্তব্য, “এখানে নতুন যিনি আসবেন, তিনি বাংলোর নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন। আর তখনই দেবদত্তার কথা আসবে, তার লড়াই আসবে। কাজের মধ্যেই বেঁচে থাকবে দেবদত্তা।”
তিনি জানান, দেবদত্তার মৃত্যুর পর রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকে তাঁর একটি স্মরণসভার আয়োজন হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। সেখানেই বাংলোর নামকরণের প্রস্তাব দেন তিনি। তাতে আপত্তি করেননি কেউ। অবশেষে দিন চারেক আগে তাঁর প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584