নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ভারতে বারবার আইনি হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে সাংবাদিকদের, এমনকি দেশদ্রোহীতার অভিযোগও আনা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। অবিলম্বে তাঁদের ওপর থেকে এই সব মিথ্যে অভিযোগ তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানালো ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট ও বেলজিয়ামের আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন।
এক যৌথ বিবৃতিতে, আন্তর্জাতিক মিডিয়া সংগঠন দাবি করে, সাংবাদিকরা যাতে নিরাপদে ও নির্ভয়ে তাঁদের কাজ করতে পারেন, কোনো হেনস্থার শিকার যাতে তাদের হতে না হয়, তা প্রধানমন্ত্রীকে সুনিশ্চিত করতে হবে।
ওই বিবৃতিতে সংগঠনগুলি বলেছে, সাংবাদিকদের কাজ খবর সংগ্রহ করা তা সরকারবিরোধী হলেও কোনোভাবেই দেশদ্রোহীতা নয়। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংগঠনগুলি মোদী সরকারের প্রবল সমালোচনা করে বলেছে, করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ে সরকার সমালোচনা বন্ধ করতে আইনের অপব্যবহার করছে। নরেন্দ্র মোদীকে লেখা ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন চলা কালে অন্তত ৫৫জন সাংবাদিককে নিশানা করা হয়েছে শুধুমাত্র সরকারের দোষত্রুটি তাঁদের খবরে তুলে ধরার কারণে। এই তথ্য পাওয়া গেছে, ‘রাইটস এন্ড রিস্কস অ্যানালিসিস গ্রুপ’ এর একটি রিপোর্ট থেকে। এই বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া সংগঠনগুলি। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর অসংখ্য কেসে ফাঁসানো হয়েছে সাংবাদিকদের, যাঁরাই সরকারের ভুল সামনে এনেছেন ঠিক তাঁদেরই নিশানা করা হয়েছে।
একেবারে সাম্প্রতিক ঘটনা, কেরালার এক সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান, বহুচর্চিত হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডে মৃত দলিত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করায় তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(ক) ধারায় দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আরও অনেক সাংবাদিককে এই ধারায় গ্রেফতার করা হয় ভারতে, যার সাজা তিন বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডও হতে পারে।
আর যেসব সাংবাদিককে দেশদ্রোহীতার মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাদের সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে এই যৌথ বিবৃতিতে। বিনোদ দুয়া, ফেস অফ নেশন নামে একটি গুজরাটি নিউজ পোর্টালের সম্পাদক দাভাল প্যাটেল, ভূমকল সমাচারের কমল শুক্ল এঁদের সকলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করা হয়েছে শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করার অপরাধে, যা কোনো ভাবেই দেশদ্রোহিতা নয়। কমল শুক্ল ফেসবুকে একটি কার্টুন শেয়ার করেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট জাস্টিস লোয়া-র বিতর্কিত হত্যাকাণ্ডের পিটিশন খারিজ করে দেওয়া প্রসঙ্গে। শুধু এই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সম্পর্কে সরকারের এই মনোভাব এবং তার প্রতিবাদ করে আর্ন্তজাতিক সংবাদ সংগঠনের এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সরকারের মুখ পুড়ল বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584