নিজস্ব সংবাদদাতা, কোলকাতা:-
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে অধিক আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হল মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা ও তা নিয়ে সৃষ্ট বহু জটিল সমস্যা। এমনিতেই ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাগুলো পর্যাপ্ত শিক্ষক ও পরিকাঠামোর অভাবে ধুকছে।অভিযোগ, রাজনৈতিক মদতপুষ্ট স্বার্থান্বেসী কিছু মানুষের অভিসন্ধিতে হাঁসফাঁস করছে পুরো মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। তার সঙ্গে অনভিপ্রেতভাবে আরেক সমস্যা যুক্ত হয়েছে ভারতীয় ডাক বিভাগের নিয়োগের আবেদনে মাদ্রাসা পাশ করা মাধ্যমিক সমতুল্য প্রার্থীদের অবজ্ঞাকে কেন্দ্র করে।সম্প্রতি ভারতীয় ডাক বিভাগের এক নিয়োগ পরীক্ষার আবেদনে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা পর্ষদ থেকে শংসাপত্র প্রাপ্ত উর্ত্তীণদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য 2017 সালে ডাক বিভাগের একই বিজ্ঞপ্তির আবেদনে মাদ্রাসা পাশ প্রার্থীদের আবেদনে কোনোও রুপ সমস্যা হয়নি। আশ্চর্যজনকভাবে 2018 এর আবেদনে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
আজ এই বিষয়ে বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম নামক এক অরাজনৈতিক সংগঠনের তরফ থেকে মাদ্রাসা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিনকে এক ডেপুটেশন দেওয়া হয়। ফোরামের তরফে এই প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের রাজ্য সম্পাদক মীর রবিউল ইসলাম , কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসিকুল আলম,আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন সাহেব,আউলাদ হোসেন,নাসিম মোল্লা ,মহঃ জাবিউল্লাহ , মনিরুল ইসলাম, পারভেজ আলম প্রমুখ।
পর্ষদ সভাপতি ও সেক্রেটারি ফোরামের প্রতিনিধিদের আশ্বাস দেন যে হাইকোর্টে ডাক বিভাগের পরীক্ষায় মাদ্রাসা পাশ প্রার্থীদের বসতে দেওয়ার দাবীতে ফোরামের তরফ থেকে পঞ্চাশ জন প্রার্থীদের নিয়ে যে কেস করা হয়েছে তাতে উকিল দিয়ে শেষ পর্যন্ত ন্যায় পাওয়ার লড়াই চালিয়ে যাবেন।
পর্ষদ সভাপতি ও সেক্রেটারি বিষয়টিকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে মনে করলেও অনেকেই আঙ্গুল তুলছে কাঁথি সওকতিয়া জুনিয়র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির করা মাদ্রাসা বোর্ডের বৈধতার বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের কেসের দিকে।
মাদ্রাসাপ্রেমী ও আপামর সচেতন নাগরিকদের মনের মধ্যে আশঙ্কার মেঘ পুঞ্জিভূত হয়েছে, ” তাহলে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা কি পুরোপুরি বিলীন হতে চলেছে?” প্রশ্ন উঠেছে তাহলে নেপথ্যে কি তারাই যারা কমিশন তুলে দিতে চাইছে? আঁতাত যে স্পষ্ট তা বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। কারণ সওকতিয়া জুনিয়র হাইমাদ্রাসার টি. আই. সি. মোতাহার হোসেন তাঁর পিতা গিম্যাগেড়িয়া হাইমাদ্রাসার টি. আই. সি. আহমেদ হোসেন শাহ ও পরিচালন কমিটির উকিল আবু সোহেল ওরফে মোতাহার হোসেনের সহোদর ভাই। এই একটি পরিবারই কি তাহলে পুরো চিত্রনাট্যের মুলে?- উঠছে প্রশ্ন।
তবে এই বিষয়ে আহমেদ হোসেন শাহের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সবাইকে অবাক করে চুপ রয়েছেন সারা রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা নানান রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন। আশঙ্কা- মাদ্রাসা শিক্ষা না ইতিহাস হয়ে যায়!
এদিকে কোনও শিক্ষামহল ও বুদ্ধিজীবিমহলের এবিষয়ে নিরুত্তাপ দেখে জনমানসে বিশেষকরে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাভাকের মধ্যে ক্ষোভের সঙ্গে সঙ্গে ভীতিরও সঞ্চার হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584