নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ
লক্ষ্য ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক। সেই আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক কে নিজের দখলে রাখতে এবার জঙ্গলমহলে প্রার্থী দিতে চলেছে মূলত আদিবাসীদের স্বার্থে লড়াই করা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)। গতবারের ডিসেম্বর মাসে কলকাতায় ঝাড়খণ্ডের পরিবহণ মন্ত্রী চম্পাই সরেন সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে ছিলেন ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই দিনাজপুর এবং মালদায় এবারের নির্বাচনে জেএমএম -এর প্রার্থী দেওয়া হবে।
জঙ্গলমহলের সিংহভাগ বাসিন্দা আদিবাসী ও মূলবাসী সম্প্রদায়ের। ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমর্থনে জঙ্গলমহলে জয় যুক্ত হয় তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবারের ২০১৮ পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এই তিন জেলায় হঠাৎ করে বিজেপি মাথা তুলে দাঁড়ায়।
অপরদিকে ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা বেলপাহাড়ির পাহাড় জঙ্গল এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে গঠিত হয় আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী দিয়ে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নেই আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ। কিন্তু এবার বিধানসভা নির্বাচন তাই এই অসংগঠিত আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক কে কাছে নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাই ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
পশ্চিমাঞ্চল (জঙ্গলমহল) কেন্দ্র শাসিত পরিষদ ও পঞ্চম তপশিলী ভুক্ত করার দাবিতে বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয় ঝাড়গ্রামের জামদা সাকার্স ময়দানে। হেলিকপ্টারে করে আসেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন। পুরাতন ঝাড়গ্রামের হেলিপ্যাডের মাঠে নামে হেলিকপ্টার। সভাস্থলে আসার পথে ঝাড়গ্রাম শহরের রাঘুনাথপুরে সিধু কানু মূর্তিতে মাল্যদান করেন।
তারপর ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন যান সভা স্থলে। বুধবার ওই মাঠেই সভা করেছিলেন দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই এদিন সভার আয়োজন করে জেএমএম। এদিন বক্তব্য রাখার সময় বেশির ভাগ কথায় সাঁওতালি ভাষায় বলেন হেমন্ত সরেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন বলেন, আদিবাসীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। আজকে চিন্তার বিষয়, এমন চাক্কিতে পেশায় হচ্ছে তাতে আদিবাসীরা সব দিক দিয়ে বঞ্চিত হয়ে পড়ছেন। এছাড়াও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপদেগে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে এমন আইন আনছে যা গরিবের জন্য খুব বিপদ।
আরও পড়ুনঃ আমি কান ধরে হিন্দি শেখাতে পারিঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
টাকার দৌলতে কৃষি বিক্রি করে দিচ্ছে ভবিষ্যতে আরও কি কি বিক্রি করবে কে জানে! দেশে আর কিছু নেই, যা পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি ছিল তাও বিক্রি করে দিয়েছে। এদের আমলে রক্ত সস্তা জল দামি হয়ে গিয়েছে। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে হেমন্ত সরেন বলেন, পুরোনো কর্মীদের পুনর্জীবিত করতে হবে পার্টিকে লড়াই করার জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। এটা আমার প্রথম সভা নয় এইতো শুরু। আজ নয়তো কাল এই এলাকার মানুষের জন্য লড়াই করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ অমিত শাহের সভাতেই দলবদলের সম্ভাবনা বৈশালীর
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার মুখ্য সচিব সুপ্রিয় ভট্টাচার্য এদিন বলেন, এখানে দেখলাম অনেকের পায়ে জুতো নেই গায়ে শোয়েটার নেই। ঝাড়খণ্ডের মত ঝাড়গ্রামের ভাষা সংস্কৃতি এক। তাই আমরা সংকল্প নিয়েছি ঝাড়খণ্ডের মত উন্নয়ন করবো ঝাড়গ্রামে। তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে জেএমএম লড়াইয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মমতা ব্যানার্জি হেমন্ত সরেন এর বন্ধু হতে পারে কিন্তু এখানে মানুষের প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি সেই দিক থেকে আমরা তাকে বন্ধু ভাবতে পারিনা। এই বারের ভোটে জেএমএম লড়ছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584