নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:
পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসার চাকরিপ্রার্থীরা আজ দ্বারস্থ হন সাংসদ মৌসম বেনজির নূরের।
চাকরি প্রার্থীরা অভিযোগ করেন মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ও সংস্থার চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে।২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ষষ্ঠ এসএলএসটি পরীক্ষার বিজ্ঞাপন প্রকাশহয়। ২০১৪ সালের ৪ ই জুন টেট এবং ২৪শে আগস্ট বিষয় ভিত্তিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। বিজ্ঞাপিত শূন্যপদ ছিল ৩১৮৩।পরে মামলার কারণে কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। চাকরিপ্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। আর সেই মামলা গড়াতে গড়াতে ২০১৮ সালের ১৭ই মে সুপ্রিম কোর্ট ২৬০০-এর বেশি শূন্যপদে কমিশনকে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ২০১৮ সালের ২২ শে জুন সুপারিশ করে প্রায় ২ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে। বঞ্চিত থেকে যান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় ৩৫০ জন প্রার্থী।
পরে কমিশন কমিশনের মাধ্যমে শর্তসাপেক্ষ চাকরি পাওয়া ২ হাজার শিক্ষকের মধ্যে প্রায় ৫৫০ জন চূড়ান্ত রায় না হওয়ায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে চাকরি পেয়ে মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে চলে যান।
বঞ্চিতদের দাবি কমিশন নিজস্ব গেজেটে প্রকাশ করে যে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পূর্বদিন পর্যন্ত সমস্ত শূন্যপদ সংযুক্ত হবে। কিন্তু তা অমান্য করে কমিশন।তাদের দাবি কমিশনের হাতে প্রথমে শূন্য পদ ছিল ৩১৮৩। পরে ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত (অর্থাৎ ফলাফল প্রকাশের আগের দিন পর্যন্ত) আরও শূন্যপদ বাড়ে ৬ হাজারের আশেপাশে। অর্থাৎ মোট শূন্যপদ দাঁড়ায় ৯ হাজার। তাদের বক্তব্য, ‘তবুও আমরা কেন বঞ্চিত বঞ্চিত?’
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল যে সমস্ত মাদ্রাসা কমিশন থেকে শিক্ষক নিতে ইচ্ছুক তাদেরকে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ দেবে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন।কিন্তু অভিযোগ ওঠে রাজ্যের বেশ কিছু মাদ্রাসা কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক চেয়েও শিক্ষক পায়নি। তেমনই উদাহরণ মালদার ন-মৌজা সুব-হানিয়া গার্লস হাই মাদ্রাসা। সেই ন-মৌজা মাদ্রাসা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ ২০১৮ সালের ৩০ শে জুলাই কমিশনকে নির্দেশ দেয় ৭ দিনের মধ্যে শিক্ষক দেওয়ার জন্য। কমিশন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন। উক্ত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করে। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন বৈধতা পায়। কিন্তু সেই সমস্ত মাদ্রাসাগুলো এখনও শিক্ষক শূন্য।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি একদিকে মাদ্রাসাগুলো শিক্ষক শূন্য, আর অন্যদিকে তারা পরীক্ষায় পাস করেও ‘নট সিলেক্টেড’। তাদের আরও অভিযোগ হাওড়ার পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসায় কমিশনের নকল সুপারিশ পত্র নিয়ে চাকরি করছে, আর তারা বঞ্চিত থেকে গেলেন। তারা সংসদের কাছে অভিযোগ করে বলেন যেহেতু মাদ্রাসা শিক্ষা, সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি স্বয়ং তাই কমিশনের কর্তারা নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য সুপরিকল্পিতভাবে তাঁকে বুঝিয়েছেন, এবং যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে অযোগ্য বলে পরিগণিত করেছেন। পুরো বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনতে চাকরিপ্রার্থীরা অনুরোধ করেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584