নিজস্ব সংবাদদাতা,কলকাতাঃ
গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ব্রাজিলের অামাজন রেন ফরেস্টে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ফলে অরণ্যের বিরাট একটা অংশ ভস্মীভূত।ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়েছে বহু বন্যপ্রানি।যা নিয়ে সমগ্র বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
আমাজনের বিধ্বংসী কাণ্ডে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্বের পরিবেশবিদ ও পরিবেশ সচেতন সাধারণ মানুষ।
অামাজন সারা পৃথিবীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের প্রায় ২০ শতাংশ সরবরাহ করে। শোষণ করে বিপুল পরিমাণ কার্বনডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়।
এই প্রক্রিয়ার বিপরীতে গিয়ে অামাজনের দাবানল শুষে নিচ্ছে অক্সিজেন আর ফিরিয়ে দিচ্ছে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মনোক্সাইড সহ অসংখ্য ক্ষতিকর গ্যাস এবং কঠিন কার্বন।
‘আমাজন রেনফরেস্ট রক্ষার আন্দোলনে এগিয়ে আসুন দেশে দেশে পুঁজিপতি গোষ্ঠীর লোলুপ দৃষ্টির থেকে বনসম্পদ ও প্রকৃতিকে রক্ষার আন্দোলনে সামিল হোন’ ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি,পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সম্পাদকডঃ নীলেশ মাইতি এই আবেদন করেন।
শুধু বিশ্বের অক্সিজেন ভারসাম্য নয় আমাজনের জীববৈচিত্রের যে ক্ষতি হচ্ছে তাও অপরিসীম এবং অপূরণীয়।বিপন্ন ওই গহিন জঙ্গলের জানা অজানা অ্যামাজনের আদিম, ‘অসভ্য’ মানুষদের অসংখ্য গোষ্ঠী।প্রতিবছরই অামাজনের রেনফরেস্টে অগ্নিকাণ্ড একটি স্বাভাবিক ঘটনা।
কিন্তু এভাবে সর্বগ্রাসী রূপ নিয়ে আগুন আগে কখনও ছড়ায়নি।আইএনপিই’র সমীক্ষা বলছে, গত বছর এই সময় পর্যন্ত তুলনা করলে,অামাজনে অগ্নিকাণ্ড ৮৩% বেড়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো এই দাবানলগুলোর অনেকগুলোই নাকি মনুষ্যকৃত।চাষবাস এবং চারণভূমি প্রস্তুতের জন্য বা শিল্পের জন্য বা অামাজনের তলায় লুকিয়ে থাকা বিপুল খনিজের ভাণ্ডারের জন্য।
ব্রাজিলের দেশীয় ও বিদেশের ধনকুবের গোষ্ঠীর দৃষ্টি এখন এই অামাজনের অরণ্যের উপর।আর এদের স্বার্থে কাজ করে চলেছে ব্রাজিলের শাসক দল যারা ক্ষমতায় আসীন হয়ে অরণ্য-সংরক্ষণের আইনকানুন অত্যন্ত শিথিল করে দিয়েছে।তাই দেখা যাচ্ছে যে সরকারের তরফ থেকে এই বিধ্বংসী দাবানল প্রতিহত করার কোনো উদ্যোগ নেই।
প্রতিটি দেশের ধনকুবের গোষ্ঠী অধিক মুনাফার স্বার্থে আজ প্রাকৃতিক সম্পদকে অবাধে লুণ্ঠন করছে আর পরিবেশ,জীব বৈচিত্রকে ধ্বংস করছে।বিপন্ন হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। পরিণতিতে ঘটছে ব্যাপক পরিবেশ দূষণ এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন।বিপন্ন হচ্ছে সমগ্র জীবজগৎ ও মানুষের জীবন।
আমাদের দেশেও তথাকথিত উন্নয়নের জন্য গত পাঁচ বছরে এক কোটি গাছ কাটার সরকারি অনুমতি দেওয়া হয়েছে।একই কথা প্রযোজ্য বুলেট ট্রেনের জন্য পঞ্চাশ হাজার ম্যানগ্রোভ কাটার পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে।
ছত্রিশগড়ের কয়েক হাজার হেক্টর অরণ্য সমবৃদ্ধ জমি তুলে দেওয়া হচ্ছে আদানি গোষ্ঠীর হাতে।সমস্ত ক্ষেত্রেই ধনকুবের গোষ্ঠীর মুনাফার স্বার্থে কাজ করে চলেছে শাসক দল।পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষার কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
এমতাবস্থায় ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির পক্ষ থেকে সামগ্রিকভাবে পরিবেশ ধ্বংসের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সমস্ত পরিবেশবিদ,বিজ্ঞানী ও পরিবেশ সচেতন মানুষকে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584