নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
করোনার কবলে গোটা বিশ্ব। কিছু মাস আগে ভারতে প্রবেশ করে কোভিড-১৯। ভারতে প্রবেশ করেই প্রথম কেরলে করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়। সেই আক্রান্ত রোগী এসেছিলেন চিনের উহান প্রদেশ থেকে। তারপর থেকে কেরলে হুহু করে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। একসময় মহারাষ্ট্র আর কেরলে ছিল সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেরল নিয়ন্ত্রণ করে করোনা সংক্রমণের পরিমাণ।

বিপুল মাত্রায় টেস্টিং ও সঠিক সময়কাল কোয়ারেন্টিনে রাখার কঠোর নিয়মের ফলেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আসে। আর সেই সমস্ত পরিকল্পনার কাণ্ডারী হিসাবে ছিলেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। পেশাগত সাফল্যের আড়ালে চলে গিয়েছিল তাঁর পোশাকি পরিচয়। কে কে শৈলজা থেকে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন ‘শৈলজা টিচার’। করোনা অতিমারির সময়ে তাঁকে নতুন ভূমিকায় পেল কেরল। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিচয় ছাপিয়ে তিনি আক্ষরিক অর্থেই করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধ করলেন দশভুজা হয়ে।
Participated in a panel discussion of @UN on the UN Public Service Day. It was an honour to be a part of a panel that included the UN Secretary-general, Director General of @WHO (@DrTedros) & many others. We had a great conversation on the ongoing efforts against #COVID19. pic.twitter.com/h2N4xEZROk
— Shailaja Teacher (@shailajateacher) June 24, 2020
কান্নুর জেলার বাসিন্দা শৈলজা বর্তমানে পিনারাই বিজয়নের মন্ত্রিসভায় দু’জন মহিলা বিধায়কের একজন। জন্ম ১৯৫৬ সালের ২০ নভেম্বর। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল শিক্ষিকা হওয়ার। বিজ্ঞানে স্নাতক শৈলজা এরপর শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন বিশ্বেশ্বরায়া কলেজ থেকে। ১৯৯৭ সালে শিবপুরমের একটি হাইস্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন তিনি। পূর্ণসময়ের রাজনীতিক হবেন বলে সাত বছর পরে সেই স্কুলের প্রিন্সিপালের পদ থেকে ইস্তফা দেন শৈলজা।
১৯৯৬ সালে প্রথম বার বিধায়ক নির্বাচিত হন নিজের জন্মস্থান কান্নুর জেলার কুথুপরম্ব কেন্দ্র থেকে। বর্তমানে তিনি সেই কেন্দ্রেরই বিধায়ক তথা কেরলের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী। কঠোর পরিশ্রমী হিসেবেই নিজের কাজের জায়গায় পরিচিত সিপিএম নেত্রী শৈলজা। করোনার আগে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন শৈলজা।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তান নয় চিন-ই বড় বিপদ বলেছে সমীক্ষা রিপোর্ট
নিপা সংক্রমণ নিয়ে মালয়ালম ছবি ‘ভাইরাস’-এ শৈলজার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রেবতী। বিদেশে করোনা সংক্রমণের কথা শৈলজা প্রথম জানতে পারেন জানুয়ারি মাসে। তার পরেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় তাঁর মন্ত্রকে। কেরলে বিপুল মাত্রায় টেস্টিং ও সঠিক সময়কাল কোয়ারেন্টিনে রাখার কঠোর নিয়মের ফলেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আসে। এই সমস্ত পরিকল্পনা করেছিলেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। এবার তাঁরই সেই কৃতিত্বকে সম্মান জানাল রাষ্ট্রসংঘ। আর রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণার পরেই তাঁকে ‘কেরলের গর্ব’ হিসাবে উল্লেখ করছেন অনেকে।
আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্তের পকেটে টান, সরকারি স্কুলমুখী অভিভাবকরা
রাষ্ট্রসংঘের পাবলিক সার্ভিস ডে উপলক্ষে একটি সভায় শৈলজাকে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। প্রতিবছর জুন মাসের ২৩ তারিখে পাবলিক সার্ভিস ডে পালন করে রাষ্ট্রসংঘ। যাঁরা সাধারণ মানুষের জন্য সর্বক্ষণ সারা পৃথিবীজুড়ে কাজ করে চলেছেন, তাঁদের সম্মান জানানো ও কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া হয় এই দিনটিতে। এ বছর বিশ্বজোড়া করোনা যোদ্ধাদের এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর তাঁদের মধ্যেই ছিলেন একজন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584