পিয়া গুপ্তা,উত্তর দিনাজপুরঃ
উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরে ধস নামলেও মান রাখলেন করিম।সারা দেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও গেরুয়া ঝড়ে বেসামাল হয়ে গিয়েছে ঘাসফুল শিবির।ওই ঝড়ের দাপটে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে তৃণমূলের তাবড় তাবড় প্রার্থীরা।এত সবের মধ্যেও ইসলামপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে আব্দুল করিম চৌধুরী অক্ষত থেকে মান বাঁচালেন তৃণমূলের। বৃহস্পতিবার ইসলামপুর উপনির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনায় এমনটাই উঠে এসেছে।
জয়ী প্রার্থী করিম চৌধুরী বলেন, “ইসলামপুরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে আবার ফিরিয়ে এনেছেন।এজন্য তাঁদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। মানুষ তাঁদের শান্তিপ্রিয় পাহারাদারকে ভোট দিয়ে ফিরিয়ে এনেছেন।তিন বছর দলের বাইরে থাকায় মানুষ চাইছিল আমি যাতে আবার ফিরে আসি।তাই তাঁরা আমার পক্ষে বেশি ভোট দিয়েছেন।
আরও বেশি ভোট পাব এমনটা হিসাবে ছিল।কিন্তু তা হয়নি।গোটা দেশেই বিজেপির ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে।সেই সঙ্গে ইসলামপুরেও ওদের ভোট বেড়েছে।” প্রশাসন জানিয়েছে,তৃণমূল ভোট পেয়েছে ৭৭ হাজার ৫২৫টি,বিজেপির ভোট পড়েছে ৫৬ হাজার ১২০টি।অন্যদিকে সিপিএম পেয়েছে ৫১২৬টি, কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ৫২০৬টি ভোট। ইন্ডিয়ান ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টি পেয়েছে ৬৫২টি ভোট এবং নোটায় ভোট পড়েছে ১৩৯১টি।
আরও পড়ুনঃ করিম চৌধুরীকে অশান্তির প্রতীক বললেন কংগ্রেস প্রার্থী
রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, গোটা উত্তরবঙ্গে যেভাবে গেরুয়া ঝড় উঠেছিল তাতে উপনির্বাচনে শাসকদলের জয় করিমের সাহেবের ব্যক্তিগত করিশমার অনেকটাই কাজ করেছে। সেই সঙ্গে কানাইয়া-করিম যুগলবন্দিও ফ্যাক্টর হয়েছে।তিনবছর দলের বাইরে থাকার পরে প্রত্যাবর্তনে মানুষের আবেগও কিছুটা কাজ করেছে।গত নির্বাচনে বিজেপি এই আসনে ১৮ হাজার ৬৬৮টি ভোট পেয়েছিল।কিন্তু উপনির্বাচনে তাদের ভোট বৃদ্ধি পেয়ে ৫৬ হাজার ১২০ হয়েছে।বিজেপির ভোট বৃদ্ধি হবে এমনটি আগেই আঁচ করতে পেরেছিল রাজনৈতিক মহল।
কিন্তু এতটা হবে তা অনুমান করতে পারেনি কেউই।রাজনৈতিক মহলের আলোচনা করিম সাহেব প্রার্থী না হলে আসনটি বিজেপির দখলে চলে যেত।দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়টি আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন।করিম সাহেবের সমর্থনে প্রচারে এসে তিনি বলেছিলেন,কানাইয়া-করিম আলাদা লড়াই করবে।
করিম সাহেবের জয়ে তাঁর অনুগামীরা সকলেই খুশি হয়েছেন।করিম সাহেবের বাড়ি গোলঘরে দুপুর থেকেই কর্মী সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। তাঁকে সকলেই শুভেচ্ছা জানান। তবে এদিন বিজয় মিছিল হয়নি। করিম সাহেব বলেন,দলনেত্রীর নির্দেশ ছাড়া বিজয় মিছিল করা হবে না।বিজেপি অবশ্য তাদের এই ফলাফল নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নয়।
বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন বলেন, “হারের কারণ অনেক আছে। কিন্তু মানুষ আমাদের লড়াইয়ে রেখেছে।আমাদের অনেক ভোট বৃদ্ধি হয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের জন্য আমরা প্রস্তুতি শুরু করছি।সেই সময় নিশ্চয়ই আরও ভালো ফল হবে।করিমের বিরুদ্ধে অন্য বিরোধী দলের প্রার্থীরা তেমন ভোট টানতে পারেননি।নানা কারণে আমাদের পরাজয় হয়েছে।” প্রসঙ্গত, এর আগে আব্দুল করিম চৌধুরী ন’বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।এবারে তাঁর এই জয় তাঁকে ১০ বারে পৌঁছে দিল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584