নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
মহিলা এবং শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রমশ বাড়তে থাকা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে এই অধ্যাদেশ আনা হয়েছে বলে দাবি কেরল সরকারের। বিরোধীদের তুমুল বিরোধিতা উপেক্ষা করেই বিতর্কিত ‘কেরালা পুলিশ আইন সংশোধনী অধ্যাদেশ’- এ সই করলেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ।
মহিলা এবং শিশুদের বিরুদ্ধে বেড়ে চলা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে এই অধ্যাদেশ আনা হয়েছে দাবি করেছে কেরালা সরকার। এই নয়া অধ্যাদেশের মাধ্যমে পুলিশ আইনকে কঠোরতর করা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশের ১১৮-এ ধারা অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি কোনও মানুষকে হুমকি দেওয়া হয়, অপমান করা হয় বা তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর উদ্দেশ্যে যদি কোনও বিষয়বস্তু পোস্ট করা হয় তাহলে দোষীদের পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ শ্রমিকদের ১২ঘন্টা কাজ করানোর যাবে, কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রকের খসড়া প্রস্তাব
অথবা, কারাদণ্ড ও জরিমানা দুই-ই হতে পারে। সংশোধিত আইনের প্রস্তাব অনুযায়ী, যে কোনও ব্যক্তি ওই দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে পারবেন বা পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও মামলা দায়ের করতে পারবে। তবে মানহানি মামলার বিধান থাকছে না এক্ষেত্রে।
তবে এই অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন মত ও পোষন করছেন , অধ্যাদেশে গণমাধ্যম শব্দটিও আছে, ফলে তা অপব্যবহারের আশঙ্কা যথেষ্টই থেকে যাচ্ছে। আইনি বিশেষজ্ঞ এবং সাইবারকর্মী জিয়াস জামাল বলেন, এই অধ্যাদেশ যত না ভালো করবে, তার থেকে বেশি খারাপ করবে।
আরও পড়ুনঃ করোনা হানা মুসৌরির আইএএস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, আক্রান্ত ৫৭ শিক্ষানবিশ আধিকারিক
কোনও ব্লগার, অনলাইন সংবাদমাধ্যম কর্মী বা সাইবারকর্মী কোনও বিষয়ের উপর কিছু লিখলে প্রতিহিংসার জন্য এই অধ্যাদেশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য ভালো হলেও, তার প্রণয়ন প্রক্রিয়া ভয়াবহ হবে। একই অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুনঃ বিহার নির্বাচনের পূর্বে ২৮২ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড ইস্যু করেছে এসবিআই
এইসব বিরোধিতার মুখে বাম সরকারের সাফাই, আপাতত যে আইন আছে, তা সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো অপরাধের জন্য উপযুক্ত নয়। সরকার পক্ষ থেকে দাবি করা হয, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণামূলক মন্তব্য এবং সাইবার বুলিং রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত মে মাসে কেরালার মুখ্যসচিব এবং ডিজিপিকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আইনমন্ত্রী এ কে বালান বলেন, এক্ষেত্রে অমূলক আশঙ্কা করা হচ্ছে,সাইবার হানা আটকানোই এই অধ্যাদেশের একমাত্র লক্ষ্য।
তাতে অবশ্য আশ্বস্ত না হয়ে বিরোধী নেতা রমেশ চেন্নাইথালা বলেন, মহিলা এবং শিশুদের যে সাইবার বুলিং হচ্ছে, তা যে কোনও মূল্যে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে ঠিকই, কিন্তু সাইবার অপরাধ মোকাবিলার আড়ালে সরকার যে সাংবাদিকদের নিশানা করবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়! যাঁরা সরকারের অনেক অপকর্ম ফাঁস করে দিচ্ছেন, সেইসব সাংবাদিকদের জন্য এই অধ্যাদেশের কয়েকটি শব্দ যথেষ্টই আশঙ্কার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584