কমিশনে শিক্ষক চেয়ে আবেদনে না খলতপুর হাইমাদ্রাসার

0
4551

নিজস্ব সংবাদদাতা, উদয়নারায়নপুরঃ-

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে শিক্ষক চেয়ে আবেদনে না করল খলতপুর হাইমাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ফলে শীর্ষ আদালতের নির্দেশনামানুযায়ী মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক নিয়োগের  সুযোগ হাতছাড়া হল তাদের।

খলতপুর হাইমাদ্রাসা

রাজ‍্যের কমবেশি ৬১৪টি সরকারি সাহায‍্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসার (কিছু মাদ্রাসার অস্তিত্ব নেই) মধ‍্যে ৫৪৯টি ইচ্ছুক মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনামানুযায়ী  মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে গত আট তারিখের মধ্যেই আবেদন করেছে। এই কর্তৃপক্ষের মধ্যে ইন্তাজ আলী শাহের মত বিতর্কিত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও আছে বলে বিশেষ সূত্র থেকে জানা গেছে। এই ৫৪৯ মাদ্রাসা বাদে বাকি মাদ্রাসা আবেদন করেনি সেটাকে রাজ‍্যের শিক্ষা মহলের একাংশ গুরুত্ব না দিলেও , খলতপুর হাইমাদ্রাসা কর্তৃক আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় তাঁরা বিস্মিত।  কারণ খলতপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক একজন সাধারণ মানুষ নন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা জগতের এক নক্ষত্রসম নাম- তিনি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী আল-আমিন মিশনের কর্ণধার এম.নুরুল ইসলাম মিদ্দ‍্যা ৷

হাওড়ার জেলা মোট ৩৩ টি মাদ্রাসার মধ্যে ৯ টি মাদ্রাসার পরিচালন কমিটি রাজ‍্য সরকার তথা মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের কাছ থেকে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেনি । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই খলতপুর হাই মাদ্রাসা।  যেখানে স্বয়ং মুখ‍্যমন্ত্রী সরকারপোষিত মাদ্রাসায় দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের ব‍্যাপারে উদ‍্যোগী হয়েছেন , সেখানে আল- আমীন মিশনের কর্ণধার নুরুল ইসলামের নীরবতা শিক্ষামহলে বেশ চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া হুলুস্থুল।

নুরুল ইসলাম আধুনিক মুসলিম শিক্ষা জগতের আইকন হয়েও মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক নিতে অনিচ্ছুক কেন ? এই প্রশ্ন উঠছে।যদিও তিনি প্রধান শিক্ষক, আর কর্তৃপক্ষের মূখ্য দায় বর্তায় ঐ মাদ্রাসার সম্পাদক তথা স্হানীয় তৃণমূল বিধায়কের উপর। তাদের বক্তব্য ‘নুরুল বাবু প্রধান শিক্ষক হলেও প্রশ্ন থেকেই যায় তিনি কি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার স্বার্থে স্হানীয় তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে গঠিত মাদ্রাসার ম‍্যানেজিং কমিটিকে রাজি করাতে পারলেন না, যেখানে ঐ মাদ্রাসায় ভ‍্যাকেন্সি ১৭টির মত? না ঐ মাদ্রাসায় শিক্ষকের অভাব নেই?’
এটাই শিক্ষিত মহলের অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না।

তাদের আরও বক্তব্য ‘যে ব্যক্তি হাজার হাজার গরিব,দুঃস্থ,মেধাবী ছেলে-মেয়েকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন দেখায়, সে ব্যক্তিটি কি করে চাকুরীপ্রার্থী দুঃস্থ-মেধাবী বেকার ছেলে-মেয়েদের যোগ্যতার নিরিখে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করলেন না?’

মাদ্রাসা কমিশন ও কমিটির বিবাদ নিয়ে যখন উদ্বেগ চরমে, ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে ক্ষণিক সমস্যার সমাধান করে শীর্ষ আদালত যখন শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে , শিক্ষার অধিকার আইনের কথা ভেবে – মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি দিয়েছেন ; তখন খলতপুর হাই মাদ্রাসা সহ অন্যান্য মাদ্রাসাগুলির পরিচালন কমিটির কমিশন থেকে শিক্ষক না নেওয়াটা কীসের ইঙ্গিত বহন করছে ? প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , আল-আমীন মিশন থেকে পাশ করা বহু ছাত্র-ছাত্রীও কমিশন কর্তৃক আয়োজিত পরীক্ষার সফল চাকুরীপ্রার্থী ।

শিক্ষামহলের একাংশের মন্তব্য- ‘আল-আমিন মিশনের কর্নধার হিসাবে নুরুল ইসলামের ভূমিকা প্রশ্নাতীত হলেও,  খলতপুর হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসাবে তাঁর ভূমিকা আজ প্রশ্নের মুখে।’ যদিও এবিষয়ে নুরুল বাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here