আদালতে আবেদন সত্ত্বেও বাড়ি ফিরতে নারাজ অপহৃতা বিজেপি কর্মীর কন্যা

0
243

পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ

kidnapped girl denied to return home
অপহৃতা বিজেপি নেতার মেয়ে প্রথমা। নিজস্ব চিত্র

লাভপুরে বিজেপি নেতার মেয়ের ‘অপহরণের’ ঘটনায় নাটক অব্যাহত।ধৃত বিজেপি নেতা,অপহৃত তরুণীর বাবা সুপ্রভাত বটব্যাল এবং আরও দুই অভিযুক্তকে বোলপুর আদালতে তোলা হলে,আদালত চত্বরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।শেষমেশ বিচারক ধৃত বিজেপি নেতার ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন এবং বাকি দু’জনের টিআই প্যারেডের নির্দেশ দেন।এ ছাড়াও অপহৃতা তরুণীকে হোমে পাঠানোরও নির্দেশ দেন তিনি।

বোলপুরের অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক অরবিন্দ মিশ্রর এজলাসে লাভপুরে বিজেপি নেতার মেয়ের অপহরণের মামলার শুনানি শুরু হয়।আদালত সূত্রে জানা গেছে,এ দিন আদালতে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা সুপ্রভাত বটব্যাল এবং উদ্ধারস্থল থেকে ধৃত রাজুবটুক সরকার এবং দীপঙ্কর মন্ডলকে হাজির করানো হয় কিন্তু উদ্ধার হওয়া তরুণীকে হাজির করানো হয়নি আদালতে।
এই ঘটনাতেই প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী।এর পরেই অভিযুক্ত পক্ষের কথা মেনে বিচারপতি তদন্তকারী অফিসারকে অপহৃতার গোপন জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন।এর পরে মেয়েটির গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়।

অন্য দিকে অপহৃতা তরুণীকে বাড়ি ফেরানোর জন্য এক আইনজীবী আবেদন করলেও,মেয়েটি বাড়ি ফিরতে রাজি হয়নি।তাই তাকে হোমের রাখার নির্দেশ দেন আদালত।এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি ফিরোজ আলি বলেন, “অভিযুক্তদের আজ আদালতে তোলা হয়েছিল এবং অপহৃতাকেও হাজির করানো হয়েছিল।পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত বিজেপি নেতার ১৫ দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয় কিন্তু বিচারক ১১ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। অপহৃতার গোপন জবানবন্দি নিয়ে তাকে সিউড়ি হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভরসন্ধেয় সুপ্রভাত বটব্যালের বাড়িতে ঢুকে পড়ে জনা কয়েক দুষ্কৃতী।রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় তাঁর মেয়ে প্রথমাকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। স্বাভাবিক ভাবেই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে ঘটনার পরে।লাভপুরের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ।অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় লাভপুর এলাকা জুড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন।বিক্ষোভের আঁচ পৌঁছে যায় আশপাশের ইন্দাস ও কীর্ণাহারেও।

শুক্রবার সারা দিন খোঁজ মেলেনি প্রথমার। শনিবার লাভপুরে ফেরার পথে স্থানীয় বাসিন্দাদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম।তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালানে হয়।কোনও মতে বিধায়ক ও তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করে লাভপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।গ্রেফতার করা হয় ১১ জনকে। রবিবার সকালে জানা যায়, বিজেপি নেতা সুপ্রভাত বটব্যালের মেয়েকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে রহস্যের সমাধান করেন বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিং। তিনি জানান, এই ঘটনা মোটেই অপহরণ নয়! বরং ইচ্ছে করে নিজের মেয়েকে অপহরণ করিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সুপ্রভাত বটব্যাল। রবিবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে সুপ্রভাত বটব্যাল-সহ তিন জনকে।যেহেতু গোটা ঘটনাটি সাজানো, তাই ‘অপহরণে’র সময়ে ওই তরুণী বাধা দেননি, চিৎকারও করেননি।

আরও পড়ুনঃ রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধিতে কন্যাকে অপহরণ বিজেপি নেতার,মত পুলিশের

বীরভূমের পুলিশ সুপারের বক্তব্য, সুপ্রভাতের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে। ওঁকে খোঁজা হচ্ছিল। চাপও তৈরি হয়েছিল। চাপ কাটাতে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তিনি অপহরণের ঘটনা সাজান।সুপ্রভাতবাবুর বেশ কয়েক জন রাজনৈতিক সহকর্মীও এই ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশের অভিমত।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here