নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
দশ মাস আগে কেরল পুলিশের হাতে ইউএপিএতে আটক দুই ছাত্রকে জামিন দিল কোচি আদালত। দশ মাস আগে কেরল পুলিশ আলান শোয়েব এবং ত্বহা ফসল নামে দুই ছাত্রকে ইউএপিএ ধারায় গ্রেফতার করে তুলে দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)-এর হাতে।
কোচির এনআইএ বিশেষ আদালত তাদের জামিন দেয় এবং রায়ে বলেছেন সাধারণ কিছু মাওবাদী পত্রপত্রিকা রাখার জন্যে বা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্যে কাউকে সন্ত্রাসবাদী বলা যায় না। প্রতিবাদের অধিকার যেকোন মানুষের সাংবিধানিক অধিকার।
কেরল পুলিশ এবং এনআইএ দু’পক্ষই জানায় মাওবাদী যোগের কারণে এই দুই ছাত্রকে দেশদ্রোহিতার অপরাধে ইউএপিএ ধারায় আটক করা হয়েছিল। আদালত জামিন দিয়েছে আলান শোয়েব ও ত্বহা ফাসলকে ।
আলান শোয়েব(১৯) ও ত্বহা ফাসল(২৩) যথাক্রমে সাংবাদিকতা ও আইনের ছাত্র এবং কেরলের শাসকদল মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত ছিল। তাদের আরেক সঙ্গী উসমান এখনও পলাতক, তিনি মাওবাদী রাজনীতির সমর্থক।
আরও পড়ুনঃ ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোরেটরিয়াম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
আলান ও ফাসলের বিরুদ্ধে কেরল পুলিশ অভিযোগ আনে এরা দুজনেই মাওবাদীদের সাথে যুক্ত, দুজনের বাড়ি থেকে পুলিশ মাওবাদী পোস্টার, পত্র পত্রিকা উদ্ধার করেছে এবং গ্রেপ্তারীর সময় তারা দেশবিরোধী স্লোগান ও দিয়েছে; দুই ছাত্র জানায় তারা ‘লাল সেলাম কমরেড’ স্লোগান দিয়েছিল । কেরল পুলিশের কাছে তা দেশবিরোধী মনে হওয়ায় অবাক সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহল। এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় এনআইএ’র হাতে।
আরও পড়ুনঃ চেক নকল করে রাম মন্দির ট্রাস্টের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৬ লক্ষ টাকা
কেরল সিপিআইএম তৎক্ষনাৎ তাদের পার্টি থেকে বহিষ্কার করে। এই ঘটনায় সেই সময় বিক্ষোভ ওঠে সাধারণ মানুষের মধ্যে। পিন্নারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে বুদ্ধিজীবী মহলে। শুধু তাই নয় এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন পার্টির মধ্যেও সমালোচনার মুখে পড়েন।
বিজয়ন এই দুই ছাত্রকে মাওবাদী আখ্যা দিলেও, সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাত, এম এ বেবি, থমাস আইসাকের মত নেতারা দুই অভিযুক্তের পাশে দাঁড়ান এবং আলান ও ফাসলের পক্ষেই কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ ফেসবুক দক্ষিণপন্থী রাজনীতির মুখপাত্র নয়ঃ মার্ক জুকারবার্গ
এনআইএ আদালতে পেশ করে দুই ছাত্রের বাড়ি থেকে সিজ করা নথি। দেখা যায় কাশ্মীরে ৩৭০ ধরা বিলোপের বিরুদ্ধে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে সংহতি জানানো একটি পোস্টার। বিচারপতি ভাস্কর বলেন, এই জাতীয় পোস্টার সর্বত্র দেখা যায়, কেউ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত পোষণ করলেই তিনি দেশদ্রোহী?
মাওবাদী পত্রিকা ও শ্রেণী সংগ্রাম সম্পর্কে পড়াশুনা করা, মাওবাদী পত্রিকা নিজের কাছে রাখা এমনকি মাওবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস রাখা, সংবিধান অনুযায়ী কোনোটাই অপরাধ নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তার দ্বারা কোনো অপরাধমূলক কাজ বা ষড়যন্ত্র সংঘটিত হচ্ছে। সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাও দেশদ্রোহ নয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584