পিপিই পরে প্রতিমা বরণ, কড়া নিরাপত্তায় শোভাযাত্রা-হীন বিসর্জনে নজির কলকাতার

0
78

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

করোনা সংক্রমণ এড়িয়ে উৎসব পালনে সরকারি নিয়ম পালনে কিছু মানুষ যেমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনই সমস্ত নিয়ম মেনে পালন করে নজিরও সৃষ্টি করেছে কলকাতা শহরের একাধিক পুজো।

PPE Kit | newsfront.co
পিপিই কিট পরে প্রতিমা বরণ। নিজস্ব চিত্র

কোথাও দেখা গিয়েছে পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পরে চলছে ঠাকুরবরণ, আবার কোথাও মণ্ডপ চত্বরেই প্রতিমাকে গলিয়ে কৃত্রিম জলাধারে হল প্রতিমা বিসর্জন। বিজয়া দশমীতে এমনই কিছু ছবি উঠে এল কলকাতায়।

Firhad Hakim | newsfront.co
বিসর্জনের ঘাট পরিদর্শনে ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র

ঠাকুরপুকুরের এসবি পার্ক পুজো মণ্ডপে পিপিই কিট পরে প্রতিমাকে বরণ করলেন এলাকার মহিলারা। প্রসঙ্গত, প্রতিমা দূর থেকে দর্শন থেকে সিঁদুরখেলা বারণ এমনকি ডিজে, মাইক নিয়ে শোভাযাত্রার নিষেধাজ্ঞার মত একাধিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবারে। সেই নিয়ম মেনে দশমীর সকাল থেকেই ঘাটগুলিতে শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জন।এ দিন দুপুরে ঘাটগুলি পরিদর্শন করেন পুর ও নগরোন্নয়মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে শহর কলকাতার ২৪ টি ঘাটে এদিনই ১৮০০-র বেশি প্রতিমা নিরঞ্জন হতে চলেছে। ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিসর্জন চলবে। তার জন্য অতিরিক্ত তিন হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী এবং পুরকর্মীরা তাদের দায়িত্বে রয়েছেন। ভাসানের পর সঙ্গে সঙ্গে নদী থেকে কাঠামো-ফুল এবং অন্যন্য সামগ্রী তুলে ফেলা হচ্ছে। বিসর্জনের সময় ঘাটে চার-পাঁচ জনের বেশি কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সর্ব ক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছে স্পিডবোটে রিভার ট্রাফিক পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বাবুঘাট, জাজেস ঘাট, নিমতলা ঘাটে চাপ বেশি থাকবে বলে মনে করছে পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ করোনা আক্রান্ত আরবিআই গভর্নর

প্রতিটি ঘাট ও ঘাটে যাওয়ার রাস্তায় ডিসি পদমর্যাদার অফিসাররা রয়েছেন। এছাড়া নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসাররা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতিটি ঘাটে করা হয়েছে মার্কিং। ২টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে চলবে নজরদারি। থাকছে মহিলা পুলিশও। বিসর্জনের জন্য কলকাতার বেশ কয়েকটি রাস্তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, এই রাস্তাগুলি হল

১) রাসবিহারী অ্যাভিনিউ হয়ে কালীঘাট রোড-টালিগঞ্জ রোড।

২) হাজরা রোড হয়ে হরিশ মুখার্জি রোড হয়ে বলরাম বসু ঘাট রোড।

৩) রেড রোড হয়ে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ-কিংস ওয়ে হয়ে স্ট্র্যান্ড রোড।

৪) বিবেকানন্দ রোড-কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট হয়ে ক্রস রোড ফাইভ।

৫) যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ-মদনমোহনতলাস্ট্রিট-রবীন্দ্র সরণি।

৬) যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ হয়ে বি কে পাল অ্যাভিনিউ হয়ে নিমতলা ঘাট স্ট্রিট।

৭) মহর্ষি দেবেন্দ্র রোড হয়ে আহিরীটোলা স্ট্রিট হয়ে স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড।

৮) চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ-যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ হয়ে বিডন স্ট্রিট হয়ে নিমতলা ঘাট স্ট্রিট হয়ে স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড।

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর পর্যন্ত কলকাতায় কার্নিভাল ছাড়াও বহু পুজো কমিটি নিজেদের উদ্যোগে বড় শোভাযাত্রা বের করেছিল। এই বছর পুজোর অনুমতি নেওয়ার সময় প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে পুলিশ জানিয়ে দেয় যে, কে, কখন, কোন ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিতে পারবে।

ফলে পুলিশের নির্দেশ অনুযায়ী, উদ্যোক্তাদের নির্ধারিত দিন ও সময়ে নির্দিষ্ট ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটি থানার আধিকারিকরা নিজেরাও খোঁজখবর নিয়েছেন, তাঁদের এলাকার কোন প্রতিমা কবে ও কখন বিসর্জনের জন্য বের হবে। পুজো উদ্যোক্তারা যাতে কোনও শোভাযাত্রা না করেন, সেদিকে নজর থাকবে পুলিশের। কোনও রকম নিয়মভঙ্গ দেখলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here