উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
আতসবাজি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করেছিলেন বাজি ব্যবসায়ীরা। আজ তা খারিজ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালতও । দীপাবলি ও কালীপুজোয় রাজ্যজুড়ে আতসবাজির বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট ৷
পাশাপাশি দীপাবলি ও ছটপুজোতেও বাজি নিষিদ্ধ করা হয় ৷ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ গত পাঁচ নভেম্বর এই নির্দেশ দেন ৷ বাজি কেনাবেচার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৷ সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান বাজি ব্যবসায়ীরা ।ব্যবসায়ীদের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ”আমরা উৎসবের গুরুত্ব বুঝি । কিন্তু এখন আমরা যে পরিস্থিতিতে আছি, সেখানে জীবনই বিপদের মধ্যে রয়েছে । জীবন রক্ষার থেকে অন্য কোনও বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না ।”
আরও পড়ুনঃ নির্দেশের পরেও কিভাবে বাজির রমরমা! পুলিশ-প্রশাসনকে ভর্ৎসনা আদালতের
কোভিড পরিস্থিতিতে এবছর বাজি বিক্রি ও ফাটানো নিষিদ্ধ করার কথা ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা আবেদন করে সারা বাংলা আতস বাজি সংগঠন। এদিন সেই আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জির ডিভিশন বেঞ্চ। বিচাপতি মহোদয়গণের স্পষ্ট বক্তব্য, “উৎসব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই কোভিড মহামারি পরিস্থিতিতে জীবনরক্ষা হল অগ্রাধিকার। মানুষের জীবন এখন সঙ্কটে। হাইকোর্ট সেই স্থানীয় পরিস্থিতির কথা বেশি ভালোভাবে জানে।” এই যুক্তিতেই কালীপুজো, দীপাবলি, ছটপুজোয় সারা রাজ্যে বাজি ফাটানোর উপর কলকাতা হাইকোর্ট যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা বহাল রাখল শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুনঃ আমজনতার জন্য শুরু হল লোকাল ট্রেনের চলাচল
প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের রায়কে হাতিয়ার করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল সারা বাংলা আতসবাজি সংগঠন। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা ছিল, যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সূচক ‘মডারেট’, সেখানে বাজি ব্যবহার করা যাবে। পরিবেশ বান্ধবে বাজি ব্যবহার করা যাবে। একইসঙ্গে বাজি ব্যবহারের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিল এনজিটি। দীপাবলিতে রাত আটটা থেকে দশটা। ছটপুজোয় সকাল ছটা থেকে আটটা। অর্থাৎ মোটের উপর দিনে দুঘণ্টা বাজি ফাটানোয় ছাড়পত্র দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
কিন্তু এনজিটি-র নির্দেশে আরও একটি বিষয় বলা ছিল। তা হল স্থানীয় পরিস্থিতির ভিত্তিতে যদি সেখানকার প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করে, তবে তা নিতে পারে। এক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। আর এনজিটি-র এই নির্দেশটিই আজকে বাজি সংগঠনের আবেদনের বিরুদ্ধে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট উল্লেখ করেছে যে, হাইকোর্ট স্থানীয় পরিস্থিতি আরও ভালো করে বুঝতে পারবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584