শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
পুরভোটে দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সময়ের অপেক্ষা না করে পুরভোটে জয়ের লক্ষ্যে কৌশলী লড়াই শুরু করে দিল রাজনৈতিক দলগুলি। বুধবার রাতের অন্ধকারে নীলরতন সরকার হাসপাতাল এবং আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের গেটের সামনে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দে-কে উদ্দেশ্য করে বিশাল হোর্ডিং ঝুলিয়ে দেওয়া হল।
ওই হোর্ডিংয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কাটমানি-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়েছে, কলকাতা টু মন্দারমনি, সৌজন্যে কাটমানি। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে কাউন্সিলর হয়ে কী ভাবে সম্পত্তি বাড়িয়েছেন, তা তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ধরে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টারে।

আর খাস কলকাতায় এমন পোস্টার রীতিমতো চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে। আগামী পুরভোটে কাটমানি যে বিরোধী দলগুলির উল্লেখযোগ্য ইস্যু হতে চলেছে, তার যেন প্রথম ঢাকে কাঠি পড়ল এই পোস্টারে। তবে হোর্ডিংয়ে যে সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, তা তাঁর নয় বলেই জানিয়েছেন কাউন্সিলর মৌসুমী দে। তাঁর দাবি, “তাজমহলের সামনে দাঁড়িয়ে তাজমহল আমার বললেই তো তা আমার হয়ে যায় না।
আরও পড়ুনঃ সরকারি অফিসে রাতেরবেলায় মদ্যপানের অভিযোগ আধিকারিকের বিরুদ্ধে
যারা অভিযোগ করছেন তারা প্রমাণ দিন। আমি টিকিট নিশ্চিত পাচ্ছি জেনে আমায় ভোটে হারানোর জন্য এলাকায় কুৎসা রটানো হচ্ছে।”
ওই পোস্টারে দেওয়া রয়েছে, ‘সৌজন্যে কাটমানি, কলকাতা টু মন্দারমনি’। তার পর ছোট ছোট করে ছবি দিয়ে কোথায় কোথায় তাঁর সম্পত্তি রয়েছে, তা দেখানো হয়েছে। ছবিতে সেই এলাকা বা রাস্তার নামও ছাপা হয়েছে। সুরি লেন এবং সার্পেন্টাইন লেনে তিনি একের পর এক বাড়ি নিজের দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে পোস্টারে।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ১০ বছর আগে তাঁর বাবা ছিলেন সেন্ট পলস স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী। কোলে মার্কেটের সামনে ছোটখাটো রুটির দোকান ছিল তাঁদের। ২০১০ সালে তিনি প্রথমবার কাউন্সিলর হন। আর মাত্র এই ১০ বছরেই তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ নাকি ব্যাপক ফুলে ফেঁপে উঠেছে। নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুনঃ পথ দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা মহিষাদলে
কলকাতায় স্থাবর সম্পত্তি আটটি এবং মন্দারমনিতে ছ’টি সম্পত্তি রয়েছে। তার সৌজন্যেই তাঁর জামাইবাবুর নারকেলডাঙা এলাকার বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন। এমনকি ওই পোস্টারে তাঁর নিজের বসতবাড়ির ছবি দিয়েও ব্যঙ্গ করা হয়েছে।
একটা ঘরের জন্য তিনটে এসি মেশিন লাগানো ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘বুঝুন কী গরম’! রীতিমতো স্টিং অপারেশন চালিয়ে যেন এই তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে, দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। অভিযোগগুলি সত্যি কিনা, তা আদৌও জনমানসে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584