অবলুপ্তির পথে লক্ষ্মীর ভাঁড়, অন্য পেশার সন্ধানে কারিগর

0
600

পিয়া গুপ্তা,কালিয়াগঞ্জঃ

Lakshmi become invisible
নিজস্ব চিত্র
Lakshmi become invisible
নিজস্ব চিত্র
Lakshmi become invisible
নিজস্ব চিত্র
Lakshmi become invisible
মৃৎশিল্পী আনন্দ পাল।নিজস্ব চিত্র

টাকা মাটি,মাটি টাকা, রামকৃষ্ণের এই বাণী যথার্থ ভাবে কার্যকর আজকের সমাজে। মানুষ যেদিন থেকে সঞ্চয় করতে শিখেছে, সেদিন থেকেই আবিষ্কার করেছে টাকা জমানোর নানা উপায়।
কখনও গাছের কোটর বা গাছের তলা,কখনও বা নিজের বিছানার তলা।এরপর সঞ্চয় করার সঙ্গে পরিবারের শ্রীবৃদ্ধির যোগ তৈরি হয়।এক সময় ছিল যখন প্রতি বৃহস্পতিবার বাড়ির গৃহিণীর এই মাটির ভাঁড়ে পয়সা ফেলেন সংসারের কল্যাণ কামনা করে। ভাঁড়পূর্ণ হলে তা ভেঙে যে টাকা পাওয়া যায় তা ঠাকুরকে দেবার রীতি ছিল।তবে
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই লক্ষ্মীর ভাঁড় ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে।বর্তমানে একদিকে যেমন খুচরো পয়সা বিলুপ্তির পথে তেমনি অন্য দিকে ব্যাংক ও এটিএমের জামানায় এখন কেউ এই লক্ষ্মীর ভাঁড়ে টাকা জমান না।তবে আবার অনেকে শুধু বংশ পরম্পরা অনুসারে এই ব্যবসা করে চলছেন।

গ্রাম গঞ্জের অনেক শিল্পীরা আজও দুটো টাকা রোজগারের জন্য এই লক্ষ্মীর ভাঁড় বা মাটির ভাঁড় বানিয়ে চলেছেন।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মুস্তাফা নগরের শিল্পী আনন্দ পাল।তিনি আজ বহু বছর ধরে মাটির ভাঁড় বা খুঁড়ি বানান।বংশ পরম্পরায় তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত।আগে এই ব্যবসা করে তিনি স্বচ্ছল ভাবে সংসার চালাতেন,কিন্তু আজকাল তার এই পেশায় পেটও ঠিকমতো চলে না এটা বলাই বাহুল্য।আনন্দ বাবুর বক্তব্যে যে,আগে মাটি বিনামূল্যে সংগ্রহ করতেন তিনি।কিন্তু এখন তা কিনতে হয় এবং তাও আবার চড়া দামে।তার উপরে তো আছে হাড়ভাঙা পরিশ্রম।তার উপর লক্ষ্মীর ভাঁড় মানুষের কাছে এখন কম প্রয়োজনীয়।সরকার থেকেও কোন সাহায্য পাই না আমরা,বরং এখন এটিএম ও ব্যাংকের যুগে কেউ আর মাটির ভাঁড়ে তেমন টাকা ও জমায় না।তবুও গ্রামবাংলায় আজও এই মাটির ভাঁড় বা লক্ষ্মীর ভাঁড়ে বহু মানুষ টাকা জমিয়ে চলছেন।আনন্দবাবু জানান তার তৈরী করা মাটির ভাঁড় রায়গঞ্জ, মালদহ সহ আজও বহু জায়গায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও লাভ তেমন হায়না তবুও মানুষ নিজেদের সখে কিংবা ঘর সাজানোর জন্যে আজও এই লক্ষ্মীর ভাঁড়ে টাকা জমান।

Lakshmi become invisible
নিজস্ব চিত্র

আনন্দ বাবু আরও জানান এই মৃৎশিল্পীর প্রতিভা নষ্ট হতে চলেছে সেটা বোধহয় বলাই বাহুল্য।তিনিও আর কিছু দিনপর এই পেশা থেকে বিরত হবেন এবং তার ছেলেকে এই পেশায় যুক্ত করতে তিনি অনিচ্ছুক প্রকাশ করেন।তাহলে কি বাংলার কুটিরশিল্প ব্যবসা থেকে এমন একটি হস্তশিল্পের করুণ পরিনতি ঘটতে চলেছে? সত্যি কি তবে অবলুপ্তির পথে এই মৃৎ শিল্প?তাঁর কথায় এটি আশ্চর্যের বিষয়,এই ভাঁড় শিল্প প্রায় অবলুপ্তির পথে।অথচ কুটির শিল্পের উপর এত জোর দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। সেখানে এই বিষয় নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় সরকার।

Lakshmi become invisible
নিজস্ব চিত্র
Lakshmi become invisible
নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা,পাল্টা প্রতিরোধ

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here