নিজস্ব সংবাদদাতা পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

কেউ আবেগে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন,মহিলারা শঙ্খ বাজিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন।কলেজ পড়ুয়া থেকে সবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে এবারে প্রথম ভোট দেবে,তার সঙ্গে ক্ষেত মজুর ,প্রান্তিক ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষী, শ্রমজীবী মানুষ সামিল হলেন পদযাত্রায়।

ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্টের সিপিআইএম প্রার্থী দেবলীনা হেমরম এর সমর্থনে বৃহস্পতিরবার শালবনীতে হয় পদযাত্রা।সেই পদযাত্রায় রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু অংশ গ্রহন করেন।সূচনা পর্বে বিমান বসু ও প্রার্থী দেবলীনা হেমরম সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেন।

শালবনী বাজারের হাটতলা এলাকায় মাঝি পাড়াতে তখন লোক দাঁড়াবার জায়গা নেই।সেই বক্তব্যে বিমান বসু বলেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদিবাসী জনজাতিকে বনবাসী বলে অপমান করছে।তার সঙ্গে তাদের বনাঞ্চলের অধিকার, জলাভৃমির অধিকার, যার মাধ্যমে তাদের রুটি রুজি ওতপ্রত ভাবে জড়িয়ে,সেই অধিকার কেড়ে নিতে তৎপর।

তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা,বিভাজনের রাজনীতি সহ ধর্মীয় মেরুকরন দ্বারা জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যা গুলির দাবি আদায়ের লড়াই কে দুর্বল করতে তৎপর।এমন পরিস্থিতিতে দেশ জুড়ে এমন মানুষ বিরোধী সমাজ বিরোধী বিজেপি কে হঠানো এবং কেন্দ্রে একটি ধর্মনিরপেক্ষ গনতান্ত্রিক জনমুখী সরকার গঠনে বামপন্থীদের জয়ী করে শক্তি বৃদ্ধির আহ্বান জানান।সেই কারনে রাজ্যে বিজেপির দোসর তৃনমূলকেও পরাস্ত করার আহ্বান জানান।কারন দেখিয়ে বলেন রাজ্যে তৃনমূল সরকার ও তার দল গনতন্ত্র মানে না।বিজেপি ও তৃনমূল দুই দূর্নীতিগ্রস্থ দল।এরা কর্পোরেট ও পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষার পাহারাদারের দল।

বক্তব্যে দেবলীনা হেমরম বলেন, ‘বামপন্থীদের জয়ী করুন।কারন বামপন্থিরাই জনগনের কন্ঠ। তারাই কৃষক, ক্ষেতমজুর,বেকার যুবক-যুবতী,শ্রমজীবি মানুষের সংকট ও তাদের দাবিগুলি নিয়ে যেমন রাজপথে ময়দানে,তেমনি সংসদেও লড়াই করে।বিজেপি আর তৃনমূল বাইরে লোকদেখানো লড়াই করে আর ভিতরে ভিতরে একে অপরকে চিমটি কেটে বোঝাপড়ার ফন্দি আঁটে।’
সংক্ষিপ্ত সভার পরই মাঝিপাড়া থেকেই পদযাত্রা শুরু হয়।পদযাত্রায় মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে সময়ের সাথে।একদল কলেজ পড়ুয়া, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া ছাত্র ছাত্রী শ্লোগানে মুখর করে তোলে মিছিল।মানুষ ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।ঘর গুলোর উঠান, ছাদে আর রাস্তার ধারে প্রত্যেক গলির মুখে মানুষের ঢল।তারাও সামিল হলেন পদযাত্রায়।কেউ প্রার্থীকে কেউ বিমান বসুকে জড়িয়ে ধরলেন,প্রনাম করলেন। মিছিল রেল লাইন পেরিয়ে ডাঙ্গাপাড়াতে।সেই সময় এক দিনমজুরী মাঠ থেকে লুঙ্গি পরা খালিগায়ে ছুটে এসে বিমান বসু দেবলীনা হেমরমের সামনে কেঁদে ফেললেন।এই পাড়াতে তার বাস নাম কার্ত্তিক লোহার।লাল ঝান্ডার মিছিলে গেলে কাজ পাবে না।সামাজিক ভাতা বন্ধ করে দেবে।একই কথা উঠে মিছিলের মধ্যে সরলা পূজারীর।তিনিও ক্ষেতমজুর। চকতারিনী চকে কলেজ পড়ুয়া কৌশিক সিং, জয়া হেমরম এবং প্রদীপ খামরুই এমন ছাত্রছাত্রীরা মিছিলে হাঁটলেন এবং অভিযোগে তারা হোস্টেলে থাকার সু্যোগ থেকে বঞ্চিত, এবং ভাতাও পায়না।তিলাখোলা রানাপাড়া এমন প্রতিটি স্থানে কেউ ঘরের ছাদ থেকে কেউ উঠান থেকে শাঁক বাজিয়ে অভিনন্দন জানায়।দীর্ঘদিন বাদে শালবনীতে লালঝান্ডার মিছিলের বহর ও জনগনের দাবি নিয়ে শ্লোগান মুখরিত গর্জন এলাকায় মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।
আরও পড়ুনঃ সিপিএম প্রার্থীর মিছিলে হামলা, আহত এক
এই পদযাত্রায় পার্টির জেলা সম্পাদক তরুন রায়,ঝাড়গ্রাম জেলার সম্পাদক পুলিন বিহারী বাস্কে,রাজ্য নেতা মধুজা সেন রায়,জেলা নেতা বিজয় পাল, সত্যেন মাইতি প্রমুখ অংশ গ্রহন করেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584