শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যে যত একের পর এক বিজেপি কর্মীর অপমৃত্যু হচ্ছে, পুজোর আগে ততই যেন অক্সিজেন পেয়ে তেড়েফুঁড়ে উঠছে এরাজ্যের বিরোধী দলগুলি। বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ শুক্লার মৃত্যুরহস্য এখনও সমাধান হয়নি। তার মধ্যেই ফের পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে পুলিশি হেফাজতে আরও এক বিজেপি কর্মীর অপমৃত্যু যেন রাজনৈতিক আগুনকে আরও উসকে দিল।
কিন্তু কি ভাবে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হল এই বিজেপি কর্মীর? জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা যুবক কিশোর ঘোড়ই কয়েক মাস আগে বাসুদেরপুর এলাকার গৌরাঙ্গ পাখুরিয়ার নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। আগে থেকে তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই দাবি স্থানীয়দের। নাবালিকার বাড়ি থেকে পটাশপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
ছেলেটির মা এই ঘটনার পর আত্মগোপন করেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ ওই যুবকের কাকা মদন কুমার ঘোড়ইকে পটাশপুর থানায় তুলে নিয়ে যায়। আদালত তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। জেল হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতায় এসএসকেএমে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ খবর দেয় মদনবাবুর মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনায় একবার এসএসকেএমে ময়নাতদন্তের পরেও আরজিকরে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বলে দেওয়া হয়েছে, ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ভিডিওগ্রাফি আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে হাইকোর্টে।
আরও পড়ুনঃ পুজোতে শহরের ২৫ মন্ডপ ‘সুপার স্প্রেডার’ হওয়ার সম্ভাবনা! সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা
এই রায়ের পরেই শুক্রবার দুপুরে ওই বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি কালীঘাটের পথে রওনা হয়েছিলেন লকেট। যদিও পথে পুলিশ বাধা দিলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায়।শুক্রবার দুপুরে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে ওই বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে কালীঘাটের পথে রওনা হয়েছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। প্রথমে দেহ নিয়ে দলের রাজ্য সদর দফতরের সামনে হাজির হয় বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ পুজোর অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের! মাস্ক-স্যানিটাইজার কেনার জন্য অনুদান, দাবি রাজ্যের
সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান দলের কর্মীরা। এর পর লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে কিছুটা এগোতেই বিপিন বিহারী গঙ্গোপাধ্যায় সরণির মোড়ে তাদের আটকায় পুলিশ। এরপর পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন লকেট।
বেশ কিছুক্ষণ বাক্ – বিতণ্ডা চলার পর রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। ফলে সেন্ট্র্যাল অ্যাভিনিউয়ের শ্যামবাজারগামী শাখা বেশ কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপর অবশ্য অবরোধ উঠে যায়। লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাংলায় একের পর এক বিজেপি কর্মী খুন হচ্ছেন। এনাকেও পুলিশ পিটিয়ে মেরেছে। মুখ্যমন্ত্রী তো দেখতে আসবেন না। আমরাই তাই তার কাছে দেহ নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পুলিশ আটকে দিল।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584