পুলিশের উন্নয়নে ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডঃ মুখ্যমন্ত্রী

0
50

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

সব পেশার মানুষদের ক্ষোভ বা সমস্যার কথা বলার একটা জায়গা থাকলেও পুলিশের সেই জায়গা নেই। করোনা যুদ্ধের সময় পর পর ৩ বার পুলিশি বিদ্রোহে সেই বিষয়টি ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এবার পুলিশের ক্ষোভ নিরসনে কিছুটা সক্রিয় হলেন তিনি। সোমবার নবান্ন থেকে সারা রাজ্যে পুলিশ ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ঘোষণা-সহ পুলিশ দিবস ঘোষণা, মহিলা পুলিশদের পুরুষ পুলিশের সমান পদোন্নতির মত একাধিক ঘোষণা করলেন তিনি।

mamata | newsfront.co
সংবাদ চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “পুলিশকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা দেখা উচিত আমাদের। তাঁদের পরিবারের ভালমন্দ ভাবার দায়বদ্ধতা আছে আমাদের। তাঁদেরও নানা সুবিধা-অসুবিধা থাকতেই পারে। তাঁরা কোথায় বলবেন? এগুলো দেখা আমাদেরই দায়িত্ব। এর আগেও ২০১২ সালে আমরা ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি করেছিলাম, সেই বোর্ড সাধ্যমতো কাজ করেছে।

আরও পড়ুনঃ খরচ কমাতে নতুন নিয়োগ সংক্রান্ত জোড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল রাজ্য অর্থ দফতর

এবার আবারও আমরা পুলিশের সমস্যায় পাশে দাঁড়ানোর জন্য ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি করলাম। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওই বোর্ড কাজ শুরু করবে। প্রত্যেক জেলার এসপি-দের ওই বোর্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে অনুরোধ করব।” শান্তনু সিনহা বিশ্বাস নামে এক আমলাকে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

একই সঙ্গে তিনি জানান, সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতিতে রাস্তায় নেমে লড়াই করেছেন পুলিশকর্মীরা। করোনার সময় লকডাউনে রাজনৈতিক মিটিং মিছিল বারণ থাকলেও অনেক রাজনৈতিক দলের কার্যকলাপের কারণে পুলিশকর্মীরা করোনার শিকার হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ১৮ জন পুলিশকর্মী শহীদও হয়েছেন। তাঁদের সাহসিকতাকে সম্মান জানাতে ১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে এবার থেকে পুলিশ দিবস হিসেবে পালন করবে সরকার। ওই দিনটিকে সম্মান জানিয়েই ওই দিন থেকেই সারা রাজ্যে পুলিশ ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড কাজ শুরু করবে।

আরও পড়ুনঃ রাজ্যে বাড়ল নার্সিং কলেজের আসন সংখ্যা

এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের মহিলাদের পদোন্নতির সুযোগ বাড়ানো হবে। বাহিনীতে মহিলা পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় এক সঙ্গে এক বছরে কাজে ঢুকেও পদোন্নতিতে দেরি হত মহিলা পুলিশের। সেই সমস্যা মেটাতে এবার তৈরি করা হচ্ছে কমন গ্রেডেশন সিস্টেম। তাতে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা পুলিশরাও সমানাধিকার পাবেন এবং একই সঙ্গে প্রোমোশন পাবেন মহিলা পুলিশরাও। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পুলিশের অভিন্ন ক্যাডার তালিকা তৈরি হবে।

এছাড়া আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজ্যের সমস্ত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন এবং যৌনকর্মীদের জন্য ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। আগামী বছর ২০২১ জুন পর্যন্ত তারাও যাতে বিনামূল্যে রেশনিং ব্যবস্থার সুবিধা পান, সেটা নিশ্চিত করা হবে।

এছাড়া প্রত্যেক সংবাদ মাধ্যম থেকে দু’জন করে অ্যাক্রেডিটেড বা সরকার স্বীকৃত কোভিড যোদ্ধা সাংবাদিককে ১ সেপ্টেম্বর সম্মান দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে জানান, সাংবাদিকদের কেউ করোনায় মারা গেলে চাকরির বন্দোবস্ত করে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ করোনাকে জয় করে যজ্ঞের আয়োজন কোচবিহার পুরসভার প্রশাসকের

এই সমস্ত বক্তব্য ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকে‘ওয়ান অফ দ্য বেস্ট’ দাবি করে তিনি বলেন, ব্রিটেনের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডসের থেকেও ভাল কাজ করছে কলকাতা পুলিশ। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, বিহার, মধ্যপ্রদেশ পুলিশের থেকে কলকাতা পুলিশ ভাল কাজ করছে।

রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। ঝুঁকি নিয়ে ট্র্যাফিক সামলাচ্ছেন অনেকেই। তারপরেও গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকতে হচ্ছে ব্যারাকে। তাই পুলিশের সংক্রমণ ঠেকাতে শহরে নতুন ২০টি ব্যারাক তৈরি করা হবে দূরত্ব বিধি মেনে, ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

যদিও মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তার কিছুই করবেন না বলে দাবি করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন,
‘মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের ক্ষোভে মলম লাগানোর জন্য এই ঘোষণাগুলো করলেন। একুশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক ঘোষণা করেছেন।

কিন্তু আমার বিশ্বাস পুলিশ হোক কি সাংবাদিক কেউ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাগুলো বিশ্বাস করেননি। কারণ মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু রাখেন না।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here