শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
হয় বাসভাড়া বৃদ্ধি, নয় কর মকুবের মত একাধিক দাবি বহুদিন ধরেই জানিয়ে আসছিল বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন। বাসভাড়া বৃদ্ধির দাবি না মানতে চাইলেও করোনা পরিস্থিতির কথা বিচার করে এবার বেসরকারি বাসের যাবতীয় কর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মকুব করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার নবান্নে তিনি এই কথা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে মোটর ভেহিক্যাল অ্যাডিশনাল কর এবং পারমিট ফিও মকুবের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ মহামারীর জেরে মার্চের শেষ থেকেই সারা দেশ জুড়ে লকডাউন জারি করা হয়। সেই সময় প্রায় ৪৫ দিন বন্ধ ছিল বাস, মিনিবাস পরিষেবা। তারপর ধীরে ধীরে চালু করা হলেও যত আসন, তত যাত্রী পদ্ধতিতে যাত্রীসংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়। আগের মত যাত্রীসংখ্যা না হওয়ায় এমনিতেই লোকসান হচ্ছিল বাসমালিকদের।
তার মধ্যে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে যায়। কোথা কোথা তলা বাস চালানো বন্ধ করে দেন আবার কোথাও নিজেরাই অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে বাস চালাতে থাকেন। এই নিয়ে বাস কন্ডাক্টরদের সাথে যাত্রীদের বিভিন্ন সময়ে তুমুল তর্কও শুরু হয়।
এই পরিস্থিতিতে প্রথমে বাসপিছু ১৫ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না বলে জানান বাসমালিকরা। রীতিমত অঙ্ক কষে তারা দেখিয়ে দেন, সরকারের মাসিক ভতুর্কির হিসেবে তাদের পুরনো ক্ষতি পুষিয়ে দৈনিক ৫০০ টাকার ঘাটতি মিটছে, কিন্তু তারপরেও প্রচুর পরিমাণ ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ এখনই বাতিল নয় জেক্সপো, জানাল কারিগরি শিক্ষা সাংসদ
এরপরই রাস্তায় বাস তুলনামূলকভাবে কম নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাসমালিকরা। তাতে রীতিমতো বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। যাত্রী পরিষেবা না দেওয়া হলে ওই বাস রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যদিও রাস্তায় নামে বেশি সংখ্যক বাস। স্বাভাবিকভাবেই বাসের সংখ্যা বাড়ায় কিছুটা হলেও রেহাই মেলে করোনা আতঙ্ক নিয়েও অফিসমুখী যাত্রীদের। যদিও তার পরেও বাসের সংখ্যা কমা-বাড়া লেগেই রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আমফান ক্ষতিপূরণ বন্টন নিয়ে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
কিন্তু দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে বাসমালিক সংগঠনের কথা বিবেচনা করে এবার বেসরকারি বাস এবং মিনিবাস সংগঠনের পাশেই দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি এই কর্মফলের কথা ঘোষণা করার পর তার উপস্থিতিতে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র নন-এসি অর্থাৎ সাধারণ মানুষের গণ পরিবহনের জন্য নেওয়া হয়েছে। এসি বাস গুলি এই কর মকুবের অন্তর্ভুক্ত নয়, কারণ তারা যে পরিমাণ ভাড়া নেয় তাতে তাদের লোকসান পুষিয়ে যাচ্ছে।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাস, মিনিবাসের কর মকুবের সঙ্গে মোটর ভেহিক্যাল অ্যাডিশনাল কর এবং পারমিট ফিও মকুবের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বাসমালিকদের কিছুটা আর্থিক সুরাহা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584