শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই রাজ্যপালের একাধিক কার্যকলাপে তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্যের। রাজ্যের একাধিক প্রশাসনিক দফতরের নেতামন্ত্রীরা তো বটেই, এমনকি নবান্নে বসেও রাজ্যপালের আচরণের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। এবার সেই প্রসঙ্গ উঠে এল একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভার মঞ্চেও। রাজ্যপালের নাম না করেও তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘দিল্লির এক তাঁবেদার বলছিল ভিসিদের শো-কজ করবে। আমি বলেছি, গায়ে হাত দিয়ে দেখান, তারপর দেখবেন ছাত্র বিপ্লব কাকে বলে।’
রাজ্য রাজনীতির প্রায় প্রত্যেক বিষয়েই কটাক্ষ করতে ছাড়েন না রাজ্যপাল। আর সেই নিয়ে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত লেগেই থাকে। আর তাতেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ। সম্প্রতি রাজ্যপাল সমস্ত উপাচার্যদের ভার্চুয়াল বৈঠকে আমন্ত্রণ জানালেও উচ্চশিক্ষা দফতর মারফত আমন্ত্রণ জানানো হযনি বলে আচার্যের ডাকা বৈঠকে কেউ যোগ দেননি। সে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় অভিযোগ করেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রকেও রাজনীতিকরণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম শোষণ চালাচ্ছে তৃণমূল সরকার।’
আরও পড়ুনঃ বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধিতে নিষেধাজ্ঞা রাজ্যের
আর এই অভিযোগ ঘিরেই ঘৃতাহুতি পড়ে নবান্নের শীর্ষমহলে। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে ধনকড়ের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণে রণংদেহি মেজাজে মমতা বলেন, “রাজ্যপাল অমিত শাহের থেকেও ভয়ানক কথাবার্তা বলছেন। একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছেন। যেন আমরা ওঁর চাকরবাকর! ওনার সঙ্গে প্রায়ই কথাবার্তা হয়। তারপরে এসব কথার মানে কী?” এর মধ্যেই ২১ জুলাইয়ের ২৪ ঘন্টা আগে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্যে সাম্প্রতিক হেমতাবাদ থেকে চোপড়ার ঘটনা জানিয়ে আসেন রাজ্যপাল। দীর্ঘ এক ঘণ্টা বৈঠক হয় তাদের।
আরও পড়ুনঃ গুজরাট বাংলা শাসন করবে না, বাংলায় সরকার ভাঙার চেষ্টা বরদাস্ত করব নাঃ মমতা
তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে রাজ্যপাল জানান, কোভিডের লাগামহীন সংক্রমণ ও মৃত্যু, রাজ্যে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক হিংসা ও আমফানের ত্রাণ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির কথা জানিয়েছেন তিনি। এমনকি একুশের সভা শুরুর আগেও রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে ট্যুইট করেন রাজ্যপাল।
এরপরই একুশের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফের ঝাঁঝালো আক্রমণ শানান মমতা। তিনি বলেন, “কেউ কেউ বলছে বাংলায় নাকি আইনশৃঙ্খলা নেই! সারা দেশে কী চলছে? একদিকে এনকাউন্টার করছে আর অন্যদিকে মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে। প্যানেলে, চ্যানেলে সব জায়গায় মুখবন্ধ।’ এরপরে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ভিসিদের শো-কজ করবেন! ভিসিদের গায়ে আগে হাত দিয়ে দেখান। তারপর দেখবেন ছাত্র বিপ্লব কাকে বলে।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584