শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা মহামারীর মধ্যেও যে দেবী দুর্গতিনাশিনীর পুজো হবে, তা আগেই নবান্নে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো বৃহস্পতিবার প্রত্যেক বারের মত কলকাতা পুলিশের সঙ্গে দুর্গাপুজো কমিটিগুলির সমন্বয় বৈঠকেও উপস্থিত রইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি অনুযায়ী দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ৫০,০০০ টাকা করে সাহায্যের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সহ একাধিক ক্ষেত্রে ছাড়ের কথাও ঘোষণা করলেন তিনি।
যদিও ভাতা বা কর্মসংস্থান ঘোষণার মত মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাও আসন্ন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটবাক্সের দিকে তাকিয়েই করা বলে দাবি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। এর আগেও ক্ষমতায় এসে ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। ফের যেন সেই একই পথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি দমকল ও অন্যান্য কর মকুব করার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুৎ খরচের ৫০ শতাংশ দিতে হবে বলেও এদিন জানান তিনি। আর্থিক সমস্যার মধ্যেও বাকি খরচ বহন করবে খোদ রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুনঃ করোনা ক্ষতি সামলাতে ব্যয় সংকোচের সময়সীমা ৩১ মার্চ! ১২ দফা নিয়ম জারি নবান্নের
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ইতিমধ্যে ২,৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তা সত্বেও এবার পুজো কমিটিগুলির পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ৫০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এ বার পুজো কমিটিগুলিকে পুরসভা বা পঞ্চায়েতকে কোনও কর দিতে হবে না। পুরসভা বা ফায়ার ব্রিগেডের খরচও দিতে হবে না।
আরও পড়ুনঃ চুক্তির শর্ত মানছে না রাফাল নির্মাণকারী সংস্থাঃ সিএজি
এর পরেই কোভিড মহামারী পরিস্থিতিতে পুজোর আয়োজনে একাধিক নির্দেশিকা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো কমিটিগুলিকে তিনি বলেছেন, মণ্ডপ খোলামেলা করতে হবে। ফিজিক্যাল ডিসট্যান্সিং’ বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা রাখতে হবে। দর্শকদের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ শহরের নস্টালজিয়া উসকে দিতে উদ্বোধন ‘ট্রাম লাইব্রেরি’-র, শুরু নয়া সফর
পুজো উপলক্ষে কোনওরকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবারে নিষিদ্ধ। অঞ্জলি, ভোগ থেকে সিঁদুর খেলা সমস্ত কিছুই দূরত্ব বজায় রেখে করতে হবে। পুজোয় যারা শারদ সম্মান দেন, তারা সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৩ টের মধ্যে দুটি গাড়িতে ঘুরতে পারবেন। ভার্চুয়াল ভাবেই বিশ্ববাংলা পুরষ্কারও দেওয়া হবে।
প্রত্যেক মণ্ডপের সামনে সচেতনতা পোস্টার লাগাতে হবে, তার মধ্যে কোভিড হেল্পলাইন এর উল্লেখ থাকবে। কোনওরকম শোভাযাত্রা ছাড়া নির্দিষ্ট ঘোষিত দিনে বিসর্জন করতে হবে। ২ অক্টোবর থেকে কলকাতা পুলিশের ‘আসান’ পেজের মাধ্যমে অনুমতি দেওয়া শুরু হবে।
ন্যূনতম ১০ বছর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পুজো কমিটিই এবারে ছাড়পত্র পাবেন। এছাড়া কোভিড পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরে দুর্গাপূজা কার্নিভালও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584