নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
১১ অগাস্ট, ১৯০৮ সাল। এই ঐতিহাসিক দিনটার কথা নিশ্চয় সকলে জানেন। এইদিনই দেশের সর্বকনিষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি বরণ করে নিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম বসু। মুজফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসি হয় ওই মহান বিপ্লবীর, তখন খাতায় কলমে তাঁর বয়স মাত্র ১৮ বছর। তারুণ্যেই যে প্রাণকে ঝরে যেতে হলো, তাঁর শরীরের মৃত্যু হলেও অমর হয়ে থেকে গেলেন প্রতিটি ভারতবাসীর মনের মণিকোঠায়। আজ তাঁর ১১২ তম মৃত্যুদিবস।
অবিভক্ত মেদিনীপুরে জন্ম ক্ষুদিরামের। শৈশবেই বাবা মা-কে হারান। মাত্র ১২ বছর বয়সেই বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন ক্ষুদিরাম। স্কুলে পড়াকালীন রিভলবার চেয়ে চমকে দিয়েছিলেন হেমচন্দ্র কানুনগোকে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে প্রথমবার ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হাতে বোমা তুলে নেন। একাধিকবার পুলিশের হাতে ধরাও পড়েন। তৎকালীন সময়ে বিহারের মুজাফ্ফরপুরের মেজিস্ট্রেট ছিলেন বড়লাট ডগলাস কিংসফোর্ড।
হাসি হাসি পরবো ফাঁসি, দেখবে ভারতবাসী…
শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য
Tribute to Khudiram Bose on the anniversary of his martyrdom
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 11, 2020
কলকাতা প্রেসিডেন্সির চিফ মেজিস্ট্রেট থাকাকালীন বহু তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের নির্মম সাজা দিয়েছিলেন তিনি। অত্যাচারী এই ব্রিটিশ প্রশাসককে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীকে। মুজাফ্ফরপুরের মোতিঝিল এলাকায় পাঠানো হয় ক্ষুদিরামকে। সেখানে হরেন সরকার নাম নিয়ে এক ধর্মশালায় থাকতে শুরু করেন ক্ষুদিরাম। একইসঙ্গে নজর রাখছিলেন কিংসফোর্ডের গতিবিধির উপর।
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় ভারতের গভীরতম ভেন্টিলেশন শ্যাফট তৈরি করল মেট্রো রেল
১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইউরোপিয়ান ক্লাবের গেটে কিংসফোর্ডের গাড়ির অপেক্ষা করছিলেন ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকী। এমন সময় একটি গাড়িতে ওই ব্রিটিশ বিচারক সওয়ার রয়েছেন ভেবে গাড়িটি লক্ষ্য করে বোমাও ছুঁড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু হিসেবের গড়মিলে এই প্রয়াস ব্যর্থ হয় দুই বিপ্লবীর।
আরও পড়ুনঃ আগামী ১৫ অগাস্টের মধ্যে বকেয়া স্কুল ফি দেওয়ার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
কারণ যে গাড়িটি লক্ষ্য করে তাঁরা বোমা ছোঁড়েন তাতে ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড ছিলেন না, ছিলেন দুই ব্রিটিশ মহিলা মিসেস কেনেডি ও তাঁর কন্যা। গাড়িতে বোমা এসে পড়লে দুই মহিলারই মৃত্যু হয়। এরপরেই প্রফুল্ল চাকি গ্রেফতার হওয়ার অনুমান করেন তাই আগেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ক্ষুদিরাম বসু। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয় এবং তিনি হাসতে হাসতে মৃত্যুবরণ করেন। এরপরই ১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট ফাঁসি দেওয়া হয় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কনিষ্ঠতম বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুকে।
আজ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ১১২ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি টুইট করে দেশের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবীকে শ্রদ্ধা জানান। টুইটে তিনি লেখেন, “হাসি হাসি পরবো ফাঁসি, দেখবে ভারতবাসী…শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য…..”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584