নিজস্ব প্রতিবেদন, নিউজ ফ্রন্টঃ
নতুন বিজেপি রাজ্য কমিটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে নানা ক্ষোভের। এমনটাই বোঝা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের কর্মকাণ্ডে। গতকালই বিজেপি মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন দলের ৫ বিধায়ক। আর বিধায়কদের দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি। এরই মধ্যেই শান্তনু ও সুব্রত ঠাকুরকে তৃণমূলে ফেরার আহ্বান জানালেন মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি বিজেপির কর্মকর্তারা।
গত শনিবার প্রকাশিত হয় বিজেপির বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতির নামের তালিকা। আর সেই তালিকা প্রকাশের পরই বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ লেফট হন বিজেপির ৫ বিধায়ক। ওই পাঁচ জন হলেন বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার, রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী এবং কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। নতুন রাজ্য কমিটিতে নেই মতুয়াদের গুরুত্ব তাই ক্ষুব্ধ বিধায়করা, আর সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
সেই প্রসঙ্গে আজ রবিবার মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “ওদের পাশ থেকে মতুয়ারা সরে যাচ্ছে বুঝতে পেরেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন তারা। সুব্রত, শান্তনু ঠাকুররা তৃণমূলে আসলে তাদের স্বাগত। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদেরকে যদি দলে নেন তাহলে একসঙ্গে কাজ করব। নিশ্চয়ই ভাল হবে।” তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদের দাবি, বিজেপি বিধায়কদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার নেপথ্যে দু’টি কারণ থাকতে পারে। হয়তো তাঁরা বুঝতে পেরেছেন রাজ্যের বাকি থাকা পুরভোটে মোটেও ভাল ফল হবে না। নতুবা, তাঁরা বুঝে গিয়েছেন মতুয়াদের জন্য যদি কেউ কিছু করে থাকেন তাহলে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ বড়দিনে বিজেপিতে ‘বিদ্রোহ’, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন একাধিক বিধায়ক
তিনি আরও বলেন যে, ‘বিজেপির ছলাকলা’ অনেকেই বুঝতে পেরেছে, অনেকেই ফোন করছেন, তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশও করেছেন। তবে দলে ফেরানো হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই নিতে পারেন। তবে কি বিজেপির মতুয়া ভোটই টার্গেট তৃণমূলের, এই মুহূর্তে সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্র সরকারের সুশাসনের তালিকায় শীর্ষে গুজরাট, সবার শেষে বাংলা
প্রসঙ্গত, বাংলার মতুয়া ভোটব্যাংক নিজেদের দখলে রাখতে তৎপর হয়ে উঠেছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেইমতো গত নির্বাচনে মতুয়া শিবির থেকে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। তবে মতুয়াদের মধ্যে প্রভাবশালী গাইঘাটার ঠাকুরবাড়ি এখন রাজনৈতিক ভাবে বিভক্ত। শান্তনু- সুব্রত গেরুয়া শিবিরে গেলেও সংঘাধিপতি মমতাবালা রয়েছেন তৃণমূলের সঙ্গে। এর ফলে মতুয়া ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তারমধ্যে বিজেপির একটা বড় অংশেই ‘বিদ্রোহে’র সুর। তবে মতুয়াদের ক্ষোভ মেটাতে আসরে নেমেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এবার এই জল কোন দিকে গড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584