কলকাতা মেডিক্যালে ট্রলির পিছনে ছুটে মেয়ের মৃতদেহ খুঁজে বের করলেন বাবা

0
76

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

ভেবেছিলেন অসুস্থ মেয়েকে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যাবেন। কিন্তু ৩৫ দিন চিকিৎসা চলার পরেও আচমকাই হাসপাতাল থেকে খবর পাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অজানা আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করে পরিবার। আর বুধবার সকালে সোজা হাসপাতালে আসার পর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।

Medical college | newsfront.co

মেয়েকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে বাবা নারায়ণ মজুমদার শেষ পর্যন্ত একটি ট্রলির পেছনে দৌড়ে দেখলেন, ওই ট্রলিতে মৃতদেহ রয়েছে তার মেয়ে ইতি টিকাদারেরই (৩৬)। জানা গিয়েছে, ২০ বছর আগে বিয়ে হওয়া পানিহাটি সুখচরের বাসিন্দা ইতি টিকাদারের সন্তান সদ্য চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।

Narayab Majumdar | newsfront.co
নারায়ণ মজুমদার

গত ২১ জুলাই কিডনি ও সুগারের সমস্যার কারণে ওই মহিলাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলেনি পরিবার। ইতিদেবী বেশ কিছুদিন তিনি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউতেও ভর্তি ছিলেন। ডাক্তারবাবু রয়েছে এতদিন ওই মহিলাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তা এককথায় মেনে নিচ্ছে পরিবার।

আরও পড়ুনঃ শহরে ফের অ্যাপ ক্যাবে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, গ্রেফতার চালক

কিন্তু শারীরিক অবস্থার কিছুতেই উন্নতি না হওয়ায় তাকে করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দেন চিকিৎসক। তারপরেই তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এলে তারপরেই তাকে গ্রিন বিল্ডিংয়ে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর থেকে হাসপাতালের হেল্পলাইনই ভরসা ছিলো পরিবারের। কিন্তু ২ দিন যাবৎ কোনও খোঁজখবর না পেয়ে অজানা আশঙ্কায় বুধবার সকালে বাবা এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা সটান এসে হাজির হন কলকাতা মেডিকেল কলেজে।

আরও পড়ুনঃ দিনহাটায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে আহত ৩

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পরেও মেয়ের কোনও খবর জোগাড় করতে পারেননি বাবা নারায়ণ মজুমদার। শেষে অসহায় বাবা এদিক ওদিক ছুটতে শুরু করেন। তখনই গ্রিন বিল্ডিং থেকে ট্রলি করে একটি মৃতদেহ করোনা রোগীর নিয়মমতো ঢেকে চেপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ট্রলির পিছন পিছন গিয়ে দেখেন, প্যাকিংয়ের গায়ে ট্যাগে আটকানো রয়েছে তারই মেয়ের নাম। মাথায় হাত দিয়ে সেখানে বসে পড়েন তিনি।

হাসপাতালে সুপার ডাক্তার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘বুধবারই ভোর রাতে ওই রোগী মারা যায়। হেল্পলাইনে ও স্বাস্থ্য দপ্তরে জানানো হয়েছিল। তবে ওরা সরাসরি হাসপাতালে চলে আসায় কোনও ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। সেই কারণে মৃতদেহ সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কিন্তু আমরা জানানোর আগে ওরা নিজেরাই তা জানতে পেরে যান। পুরোটাই কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here