পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বহু টালবাহানার পর আজ ৭ই পৌষ শুরু হয়েছে ১২৩ তম পৌষ মেলা। বিশ্বভারতীর হুঙ্কার উপেক্ষা করে ইতিমধ্যে মেলাপ্রাঙ্গণে বহু ব্যবসায়ী নিজেদের পুরনো জায়গাতেই স্টল দিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে যদিও বিশ্বভারতী সূত্রের খবর অনলাইনে মাত্র ৭০০ স্টল বুকিং হয়েছে অন্যবারের তুলনায় অর্ধেক স্টল বুকিং করেছে ব্যবসায়ীরা অনলাইনের মাধ্যমে বিগত কয়েক বছর ধরে গড়ে ১৩০০ থেকে ১৪০০ স্টল বসে পৌষমেলায় কিন্তু গুরুদেবের পৌষ মেলা নিয়ে ভাবনা সেই ভাবনাকে উপেক্ষা করে বিশ্বভারতীর লাভ-লোকসানের চক্করে বহু প্রান্তিক ব্যবসায়ী এবং লিটল ম্যাগাজিনের স্টল মালিকরা নিজেদের স্টল দিতে পারেননি শুধুমাত্র টাকার অভাবে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বভারতী জুড়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। আশ্রমিক থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দাবি, যে উদ্দেশ্যকে নিয়ে পৌষ মেলা শুরু হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য আজকের দিনে ম্লান হয়ে গেছে বিশ্বভারতীর খামখেয়ালিপনায় গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষ মেলা ঘিরে কখনো লাভ-লোকসানের অংক কষেননি।
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার জানিয়েছেন পরিবেশ আদালত পৌষ মেলা ঘিরে যে নির্দেশ দিয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে কিন্তু বিশ্বভারতীর উপাচার্য মেলার মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নিয়মবহির্ভূত ভাবে বিশ্বভারতীর নির্দেশিকা উপেক্ষা করে যে স্টল ব্যবসায়ীরা মেলার মাঠে দোকান দেবেন তাদেরকে তুলে দেওয়া হবে। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিং জানিয়েছেন প্রত্যেকবারের মতো আমরাও নিজের নিজের জায়গাতেই স্টল দেবো। তারপর যদি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গাজোয়ারি করে স্টল তুলে দিতে আসে তাহলে ফের বিক্ষোভ দেখানো হবে।
অন্য বারের মতই এবারেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হস্তশিল্পীদের পসরা নিয়ে পৌষ মেলায় হাজির হয়েছে। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর মেলার শেষে পৌষ মেলার আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মীদের দিয়ে মেলা নিরাপত্তার জন্য বাড়তি ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীকে। প্রায় ১০০ জনের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মীদের একটি দলকে পাঠানো হয়েছে বিশ্বভারতীতে। মেলা পরিচালনার জন্য বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানিয়েছেন তিন হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হবে মেলা নিরাপত্তার জন্য, থাকবে ১০০ টি সিসিটিভি ক্যামেরা, সাহায্য নেওয়া হবে ড্রোন ক্যামেরার।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন পৃথিবীর মানচিত্রে পৌষ মেলা শান্তিনিকেতন পর্যটকদের কাছে একটি পীঠস্থান কিন্তু সমস্যা হল শান্তিনিকেতনে কোথাও আবর্জনা পরিষ্কার করার নিকাশি ব্যবস্থা নেই তাই মেলা ঘিরে শান্তিনিকেতনে দূষণ বেড়ে যায় জাতীয় পরিবেশ আদালত নিকাশি ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে যেখানে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বীরভূমের জেলাশাসক বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান এবং পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্যরা থাকবে যাতে পৌষ মেলা শেষে সঠিক নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বচ্ছ শান্তিনিকেতনকে পর্যটকদের হাতে তুলে দেওয়া যায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584