শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
কলকাতার অনেক সেতুর অবস্থা যে শোচনীয়, তা উঠে এসেছিল কেএমডিএ রিপোর্টেই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া সত্ত্বেও মাঝপথে থমকে যায় মেরামতির কাজ। যদিও এখন করেনার জেরে রাস্তায় জনশূন্যতাকে কাজে লাগিয়েই শহরের একাধিক সেতু সারাই করে ফেলতে চাইছে পুর ও নগরোয়ন্নয়ন দফতর।

সম্প্রতি ১৬ টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সূত্রের খবর, তার মধ্যে সবচেয়ে স্বাস্থ্য খারাপ কালীঘাট ও চিংড়িহাটা সেতুর। এবার তাই জোড়া সেতু মেরামতির মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে চলেছে পুর নগরোন্নয়ন দফতর। দ্রুত কালীঘাট ও চিংড়িহাটা সেতুর মেরামতির কাজে হাত দিতে চায় পুর নগরোন্নয়ন দফতর।
লকডাউনের মাঝেই ব্রিজ মেরামতির কাজ অনেকটাই এগিয়ে রাখতে চেয়েছিল সংশ্লিষ্ট দফতর। কিন্তু কর্মী সমস্যার জেরে তা সম্ভব হয়নি। ওই দুটি সেতুতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ না করে কিভাবে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে কাজ করা যায় সেদিকে নজর দিচ্ছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।
আরও পড়ুনঃ ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে বিকল্প রোজগারের পথ দেখাবে প্রশাসন
বৃহস্পতিবার কেএমডিএ’র তত্ত্বাবধানে থাকা সব সেতু নিয়ে দফতরের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই উঠে আসে শহরের পূর্ব ও দক্ষিণের দুই সেতুর স্বাস্থ্যের কথা। চিংড়িহাটা ও কালীঘাট সেতুর অবস্থা ভীষণ খারাপ বলে উল্লেখ করেন বৈঠকে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা। একদিকে যেমন জানা যায় ১২ বছর পুরনো চিংড়িহাটা সেতুর নকশা নিয়ে সমস্যা আছে। অন্যদিকে ৫০ বছরের কালীঘাট সেতুর নকশা এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে ব্রিজের কাঠামো দেখতে গিয়ে নানা ধরণের সমস্যার মধ্যে পড়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা।
চিংড়িহাটা সেতুর পিলারের অবস্থানে সমস্যা আছে জানিয়ে এই সেতু সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম জানান, “আমরা ওখানে নতুন সেতু তৈরি করব। ইএম বাইপাস থেকে একেবারে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে৷ তারপরে বাজেট দেখে কাজ এগোবে।”
আরও পড়ুনঃ ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পুনর্বিবেচনার আর্জি বেসরকারি বাস মালিকদের
এদিকে দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাট সেতুর নকশা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই সেতুর একটি স্প্যানে ত্রুটি আছে। কি করে এই স্প্যান মেরামত করে কাজ চালানো যায় তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “দক্ষিণের এই সেতু তো একেবারে বন্ধ করা যাবে না। তাতে যান চলাচলের ওপর প্রভাব পড়বে। অন্যদিকে এই সেতুর যা অবস্থা তাতে একে সারাতেও হবে শীঘ্রই। ফলে একটা মাস্টার প্ল্যান বানানো হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে শহরের একাধিক উড়ালপুলগুলির অবস্থা জানতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।অমিতাভ ঘোষালের নেতৃত্ব একটি ব্রিজ এক্সপার্ট কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়। এই কমিটি শহরের সব উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে।সব মিলিয়ে শহরের ১৬টি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কথা ছিল। যার মধ্যে ১১টি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584