মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
এনআরসি এখন আতঙ্কের অন্য নাম। সম্প্রতি প্রতিবেশী রাজ্য অসমে এনআরসি হওয়ায় জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পরেছে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। নিজে ভুমে তারা এখন পরবাসী। নাগরিকত্ব হীনতার যন্ত্রণা এদেরকে কুড়ে খাচ্ছে। অসম রাজ্যের প্রতিবেশী জেলা কোচবিহার। এই জেলার সাথে সামাজিক,আর্থিক, সাংস্কৃতিক দিক থেকে যোগাযোগ রয়েছে। তাই খুব দ্রুত এনআরসির আতঙ্ক। তবে আমাদের ও ছাড়তে হবে দেশের মাটি। এই আতঙ্ক এমন এক পর্যায় পৌঁছেছে মানুষ গোটা দিন ব্যস্ত থাকছে। আর এর ফলেও নাকি পূজার বাজারে মন্দা দেখা দিয়েছে।
কোচবিহার জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ীর সম্পাদক উত্তম কুন্ডু বলেন, এনআরসি আতঙ্কে মানুষ এখন ভীত। এই আতঙ্কের অন্যতম কারন এই সময় কালে রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের উদ্যোগে রেশন কার্ডের সংশোধনের কাজ ও নির্বাচন কমিশনের ভোটার কার্ডের তথ্য যাচাইয়ের কাজ। এর ফলে মানুষের মুখেমুখে রটে যায় জেলার সর্বত্রে। এটা এনআরসির প্রাক প্রস্তুতি। এরই প্রভাব পরেছে পূজার বাজারে। মানুষ তার সঠিক কাগজ পত্র সংগ্রহ করতে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন বারবার। অভিযোগ,এর ফলে সাধারন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এই পর্যন্ত রাজ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি উঠেছে।
মঙ্গলবার কোচবিহার ১নং ব্লকের ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হাওয়ারগাড়ি গ্রাম এলাকায় এনআরসির আতঙ্কের মৃত্যু হয় বছর সাতাইয়ের আরজিনা খাতুন বিবি।
পরিবারের দাবি, গত কয়েকদিন ধরে রেশন কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য বিডিও অফিসে ছুটোছুটি করছিলেন। পাশাপাশি ওই গৃহবধুর ভোটার কার্ডেও ভুল রয়েছে বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকদিন ধরে ওই গৃহবধুর তার কাগজ সংশোধন করতে স্থানীয় বিডিও অফিসে যান। সেখানে দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকলেও তিনি তার রেশন কার্ডের কাজও করাতে পারে নি। কিন্তু এনআরসি আতঙ্কে ফলে কিভাবে ভোটার কার্ড সংশোধন করবে তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। ফলে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে ওই গৃহবধূ। মঙ্গলবার সকালে ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে যান ওই গৃহবধু। সেখান থেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন তিনি। পরে মানসিক অবসাদেই নিজের ঘরের মধ্যে বাড়ির লোকের আড়ালে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই গৃহবধু।
এদিন মৃতা গৃহবধূ আরজিনার খাতুন বিবির বাড়িতে যান এলাকার বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি বলেন, “যেভাবে এনআরসি আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজ্য জুড়ে। তাতে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বিজেপির রাজ্যে সভাপতি দিলীপ ঘোষ ধর্মীয় বিভেদ করে মানুষকে উত্তেজিত করছে তাতে বাংলার সংহতি বিপন্ন হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ পথ দুর্ঘটনায় বৃদ্ধের মৃত্যু
সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি, এরাজ্যের মানুষকে ধর্মীয় ভাবে ভেদ করে করতে চাইছে। আমরা মানুষের পাশে রয়েছি। আতঙ্কের কোন কারন নেই। এরাজ্যে এনআরসি হবে না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন এরাজ্যে এনআরসি হবে না। তাই মানুষ যেন অযথা ভয় না পায় সে বিষয়ে মন্তব্য করেন মিহির বাবু।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584