শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যের সমস্ত করোনা হাসপাতালে মোবাইলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল রাজ্য সরকার।মঙ্গলবার রাতে এই মর্মে নবান্ন থেকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে সমস্ত জেলার জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং করোনা হাসপাতালের সুপারদের। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়াতে পারে। সেই কারণেই সমস্ত করোনা হাসপাতালে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ২ দিন আগে এমআরবাঙুর হাসপাতালে একটি ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কি না, তা নিয়ে ছড়িয়েছে জল্পনা।
প্রসঙ্গত, ২ দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। তাতে এক যুবকের কন্ঠস্বর শোনা যায়। তিনি দাবি করেন, সেটি বাঙুরের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভিতরের ছবি। সেখানে করোনা সন্দেহে ভর্তি ব্যক্তিদের পাশেই কয়েকটি মৃতদেহ পড়ে আছে। যে যুবকের গলা শোনা যাচ্ছিল, তিনি দাবি করেন, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে কমপক্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টার অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর
প্রত্যেকেরই করোনার মত উপসর্গ শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃতদেহ সরানো হচ্ছে না। মৃতদেহ সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা রয়েছে অথবা কালো কাপড় দিয়ে ঘেরা রয়েছে । আর তার দুপাশে রয়েছে রোগীরা । আর তিনি নিজেও আতঙ্কিত বোধ করছেন সেই ভিডিওটি টুইট করেন বাবুল। তুলে দেন ফেসবুকেও। ভিডিওটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তদন্তের আর্জি জানান তিনি। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সব রাজ্যবাসীর মোবাইলে। অনেকেই দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সত্যতা নিয়ে মুখ খোলেনি রাজ্য। কিন্তু এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাজ্যের করোনা হাসপাতালে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করায় বিষয়টিকে ‘দুইয়ে দুইয়ে চার’ মনে করছেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ওই নিয়ম চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে রোগী সকলের জন্য প্রযোজ্য। কেউ মোবাইল নিয়ে হাসপাতালের মধ্যে ঢুকতেও পারবেন না। ঢোকার আগেই মোবাইল জমা রাখতে হবে নির্দিষ্ট জায়গায়। তার বিনিময়ে রশিদ দেওয়া হবে। হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় ওই রশিদ দেখিয়ে মোবাইল ফেরত পাওয়া যাবে।
তবে হাসপাতালগুলিতে যোগাযোগের জন্য যাতে অসুবিধে না হয়, তার জন্য বেসিক ফোন এবং ইন্টারকমের ব্যবস্থা করা হবে। কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখা এবং এবং কাজে যাতে সমস্যা তৈরি না হয়, সে কারণেই এই ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে রোগীরাও যাতে বাইরে থেকে আসা ফোন ধরতে পারেন এবং বাইরে ফোন করতে পারেন, তার সুবিধাও দেওয়া হবে।অবিলম্বে এই নিয়ম রাজ্যের সমস্ত করোনা হাসপাতালে কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
এদিকে এই নির্দেশিকার পর বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় দাবি করেন, রাজ্যের সিদ্ধান্ত থেকে কার্যত প্রমাণিত যে ভিডিওটি সত্য ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও সেটিকে ভুয়ো বলে দাবি করেনি বা হাসপাতালটি বাঙুর নয় বলে ঘোষণা করেনি। যেটা আমাদের এটা বিশ্বাস করার একদম কাছে নিয়ে যাচ্ছে যে, ভিডিওটা আসল।’ রাজ্যে যে অনেক তথ্যই চাপা দেওয়া হচ্ছে, হাসপাতালে ভিতরে অনেক অপকীর্তি সাধারণ মানুষের সামনে আসছে না, এই ঘটনাতে যেন তা উজ্জ্বল হবে প্রমাণ হয়ে গেল, বলে দাবি বিজেপি সাংসদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584