শ্যামল রায়,নদীয়াঃ
স্বপ্ন ছিল অনেক বড় শিল্পী হবার। কিন্তু এখনও কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে নদীয়া জেলার লোকগানের শিল্পী মৌসুমী মন্ডল কে।রবিবার শিল্পী মৌসুমী মণ্ডল জানালেন যে নদীয়া জেলার ধানতলা থানার হাট বহিরগাছি গ্রামে তাঁর বাস।
প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করেও ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে গিয়েছেন মৌসুমী মন্ডল।তাই বলতে হয় এই সময়কালের বাউল ও লোকসঙ্গীত শিল্পী মৌসুমী মণ্ডল দর্শকদের কাছে অতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন।
কথা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে “এমন একটা সময় ছিল যে ছোট ছেলেদের কে একটা বিস্কুট কিনে খাওয়াব তারও অর্থ যোগান ছিল না।
অভাব বলতে যা বোঝায় একটা চরম সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে আমাকে বেঁচে থাকতে হয়েছে।কিন্তু সহযোগী বন্ধু কখনো জোটেনি আমার জীবনে।
তবে অভাব ছিল প্রতি পদে পদে।আমার স্বামী বীরেন মন্ডল একজন প্রতিবন্ধী হলেও তার সমস্ত রকম ভালোবাসার সহযোগিতা নিয়ে আজও এই সঙ্গীত জগতে আমার অবাধ বিচরণ।”
তাই নদীয়া জেলার ধানতলা থানার কীংবদন্তী বাউল শিল্পী মৌসুমী মণ্ডল আরো জানিয়েছেন যে “ছোট বেলায় পাড়ায় কোন অনুষ্ঠান হলে পিতা বিজয় মণ্ডলের হাত ধরে অনুষ্ঠান দেখতে ও গান শোনার জন্য যেতাম।তখন আমরা থাকতাম চাকদহ থানার বনমালীপাড়ায়।
আরও পড়ুনঃ অর্পিতার সমর্থনে প্রচারে লোকশিল্পীরা
অনুষ্ঠানে কোন শিল্পী গান গায়লে মনের মধ্যে গান করার প্রেরণা জাগতো। সেখান থেকেই গান শেখার প্রেরণা পায়।পরবর্তী কালে হাট বহিরগাছি গ্রামে বীরেন মণ্ডলের সাথে বিবাহ হয়।শ্বশুর বাড়ীতে এসে লোকগীতি গানের চর্চা শুরু করি।” তখন মহিলা শিল্পী তেমন ছিল না।ফলে অল্প দিনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মৌসুমী নাম প্রচারে চলে আসে।বাংলায় সেই সময় যেসব মহিলা শিল্পী ছিলেন তাদের মধ্যে পিপাশা বিশ্বাস,রেণু মৃধা, শিবানী সরকার, শুক্লা দাস প্রমুখ।
তাদের মধ্যে মৌসুমী মন্ডল আজ অতি পরিচিত এবং জনপ্রিয়। ইতিমধ্যে নদীয়ার সীমানা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে মৌসুমী মন্ডলের নাম।বর্তমানে উত্তর বঙ্গে বেশি সময় সঙ্গীত নিয়ে কাটান।মৌসুমী মণ্ডল বাংলাদেশ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাউল উৎসবে অংশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। তার সঙ্গীতের উত্তর উত্তর শ্রীবৃদ্ধী পাচ্ছে।
তবে প্রতিভাবান এই শিল্পী এখনো গড়তে পারেনি মনের মতো বাসগৃহ। মৌসুমী মণ্ডল ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পী পরিচয়পত্র পেয়েছেন। সেই সাথে রাজ্যের বিভিন্ন মেলা, ক্লাব, দিয়েছে বহু পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন।
অনেকেই বলেছেন উপযুক্ত মাধ্যম পেলে হতে পারেন বাংলার অন্যতম একজন লোকশিল্পী।
মৌসুমী জানান তাঁর দুটি সন্তান।বাপি ও চয়ন।
চয়ন বারো ক্লাসে পড়াশোনা করে এবং বাপি ও বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।শিল্পী মৌসুমী মন্ডলের ইচ্ছে আগামী দিন একজন বড় মাপের শিল্পী হবার। তার সুরের মধ্যে দিয়ে মানুষের মনে শান্তি ও স্বস্তি দেওয়াটাই বড় কাজ,আর তা করতে পারলে তিনি নিজেও শান্তি পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন এই শিল্পী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584