উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাংলায় ঠাকুরনগরের সভায় তারিখ স্থির হতেই পাল্টে ফেললেন নিজেকে। বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর পণ করেছিলেন নাগরিকত্ব আইন চালু না হওয়া, পর্যন্ত দলের কোনও কর্মসূচিতে থাকবেন না। গত চার মাসে দলীয় কাজে তাঁকে দেখাও যায়নি। শুক্রবার পণ ভাঙলেন শান্তনু ঠাকুর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখওয়াতের পাশে দলের ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা গেল।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখওয়াত বলেন মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঠাকুরবাড়িতে এসে ঘোষণা করে গিয়েছিলেন, মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রীয় সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করেছে। কিন্তু সেই আইন এখনও লাগু হয়নি। মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর নাগরিকত্ব আইন চালুর দাবিতে সরব হন। দিল্লিতেও তিনি একাধিকবার দরবার করেছেন।
কিন্তু আইন চালু হয়নি। গতবছরের অক্টোবরে বারাসতে মতুয়াদের একটি সভায় শান্তনু প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, নাগরিকত্ব আইন চালু না হলে মতুয়ারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও জানান, নাগরিকত্ব আইন চালু না হওয়া পর্যন্ত দলের কোনও কর্মসূচিতে তিনি থাকবেন না। এটাই ছিল তাঁর পণ। গত চারমাসে বিজেপি বনগাঁয় একাধিক বড় কর্মসূচি করেছে। শান্তনুকে কোথাও দেখা যায়নি। খোদ দলের রাজ্য সভাপতির সভামঞ্চেও তিনি গরহাজির ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ মুখোমুখি বাম – কংগ্রেস, আসন সমঝোতার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
শান্তনুর মান ভাঙাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আসরে নামেন। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলা ভেঙে বনগাঁ নতুন সাংগঠনিক জেলা তৈরি করা হয়েছে। শান্তনুর অনুগামী মনস্পতি দেবকে সেই জেলার দলীয় সভাপতি করা হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঠাকুরনগরে আসবেন। সেদিন মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে তিনি বার্তা দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেদিন থেকে শান্তনু আবার দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে তাঁর অনুগামীরা জানিয়েছিলেন। তারই মধ্যে পণ ভেঙে শুক্রবার দলীয় কর্মসূচিতে শান্তনুকে দেখা গেল। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখওয়াতের সঙ্গে গৃহসম্পর্ক অভিযানে শামিল হলেন। গজেন্দ্রর সঙ্গে ঘুরলেন পাড়ায় পাড়ায়।
আরও পড়ুনঃ ভুয়ো বিল! রোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্য কমিশনের
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য তিনি বলেছেন, “আমি এতদিন সময় পাচ্ছিলাম না বলে দলের কাজে থাকতে পারিনি। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসেছেন। আমি ফাঁকা ছিলাম। তাই মন্ত্রীর সঙ্গে থাকতেও পেরেছি।” তাঁর আগের ঘোষণা স্মরণ করিয়ে দিতেই শান্তনু বলেন, “নাগরিকত্ব আইন চালু না হলে দলের কাজে থাকব না বলেছিলাম ঠিকই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩০ জানুয়ারি আমাদের দাবি পূরণ করবেন বলে আশা করছি। তাই, আমরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584