পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে খুন করার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার প্রেমিক ও মৃত ব্যক্তির স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সদাইপুর থানার করমখাল গ্রামে।
মঙ্গলবার সকাল বেলায় স্থানীয় মানুষরা চাষের কাজে মাঠে যাবার সময় দেখে ধুলোমাখা অবস্থায় মাটি থেকে পায়ের কিছুটা অংশ বাইরের দিকে বেরিয়ে আছে। ধীরে ধীরে গ্রামের বাইরের মাঠে একটি মৃতদেহ পড়ে আছে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে মৃতদেহ দেখতে ভিড় জমায় গোটা গ্রামের মানুষ। খবর দেওয়া হয় সদাইপুর থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে মাটি খুঁড়ে মৃতদেহটি এবং মৃতদেহের পাশে পড়ে থাকা একটি হাঁসুয়া উদ্ধার করে। মৃতদেহ উদ্ধার হতেই গ্রামের বাসিন্দারা চিনতে পারে যুবকটিকে।
সোমবার দুপুর থেকে গোপীনাথ পাতর নিখোঁজ ছিল বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
পুলিশের প্রথম থেকেই সন্দেহ যায় স্ত্রী শ্যামলী পাতরের ওপর। সোমবার দুপুর থেকে গোপীনাথ নিখোঁজ থাকা সত্ত্বেও কেন থানায় এসে নিখোঁজের অভিযোগ জানাল না স্ত্রী শ্যামলী সেখান থেকেই পুলিশের সন্দেহ জাগে খুনের সঙ্গে যুবকের স্ত্রী জড়িত থাকলেও থাকতে পারে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেবার পরে খুনের তদন্তে নেমে পড়ে সদাইপুর থানার পুলিশ।
থানায় নিয়ে এসে শ্যামলী পাতরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেরিয়ে পড়ে আসল সত্য। মৃত যুবকের স্ত্রী জানায়, স্বামীর বন্ধু বচ্চন ঘোষের সাথে বিয়ের আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও তাদের মধ্যে সম্পর্কে কোনো ছেদ পড়েনি। বেশ কয়েকবার শ্যামলীর সাথে গোপিনাথের এ নিয়ে অশান্তি ও হয়। গৃহবধূটি জানায় গোপীনাথ কাজে বাইরে চলে গেলে হামেশাই বচ্চন তার সাথে দেখা করতে আসত। দেখা করার ঘটনা গোপীনাথ জেনে ফেলায় মারধোর করতো শ্যামলীকে, সেই অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে গোপীনাথ পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করে স্ত্রী শ্যামলী, পরিকল্পনা সফল করতে সাহায্য নেয় প্রেমিক বচ্চনের। যেহেতু বচ্চন ও গোপিনাথ দুজনে একে-অপরের বন্ধু তাই সহজেই গোপীনাথকে মদ খাওয়ার প্রলোভন দিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে প্রচুর মদ্যপান করিয়ে গোপীনাথকে বেহুশ করে ফেলে বচ্চন। এরপরেই হাসুয়া দিয়ে গোপীনাথ এর গলার নলি কেটে ফেলে বচ্চন।
আরও পড়ুনঃ স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাওয়া দশম শ্রেণীর পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার
ঘটনাটি যখন ঘটছিল তখন অদূরেই দাঁড়িয়েছিল গোপীনাথ এর স্ত্রী শ্যামলী। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের দাবি, খুনের পরে মৃত দেহটি মাটিতে পুঁতে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল কিন্তু সময়ের অভাবে কোন ভাবে মৃতদের উপর মাটির দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে শ্যামলী ও বচ্চন।
গ্রামের শেষ প্রান্তের একটি শ্যালো পাম্পের ঘর থেকে পুলিশ গৃহবধূর প্রেমিক বচ্চন ঘোষকে গ্রেফতার করে। বুধবার গোপীনাথ পাতরকে খুনের অভিযোগে স্ত্রী শ্যামলী ও তার প্রেমিক বচ্চনকে আদালতে তোলা হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584