শ্যামল রায়,নবদ্বীপঃ
চৈতন্য ভূমি নবদ্বীপ শহরের গা ঘেঁষে গৌরাঙ্গসেতুর পাশেই রেল ব্রিজের কাজ প্রায় শেষের মুখে কিন্তু রেলপথের জন্য যে জমি প্রয়োজন,সেই জমি দিতে অনিচ্ছুক চাষিরা।তাই রেল ব্রিজ তৈরি হয়ে গেলেও রেলপথের জন্য জমি অধিগ্রহনে বাধা।বুধবার এই এলাকায় প্রশাসনিক আধিকারিকরা এলেও কোন সমস্যা সমাধান হয়নি।স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি তাদের বহু ফসলি জমি রেলপথের জন্য দিতে ইচ্ছুক নয়।আর যদি নাছোড়বান্দা ভাবেই সরকারকে জমি দিতে হয় তাহলে তাদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।এই দাবিতে অনড় স্থানীয় বাসিন্দারা।মঙ্গলবারও এলাকায় এসেছিলেন জমি অধিগ্রহণ করতে প্রশাসনিক দফতরের আধিকারিকরা কিন্তু এলাকার মানুষদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তারা।কোন ভাবেই রেলপথের জন্য জমি নিয়ে সমাধানের পথ পরিষ্কার হয়নি আজও।
যদিও গত ৩০ নভেম্বর পূর্ব বর্ধমানের কালনায় প্রশাসনিক সভাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে,কোনো উন্নয়নমূলক হাতে যদি জমি অধিগ্রহণ করতে হয় তাহলে চাষীদের বিরুদ্ধে এই সরকার কখনো যাবেনা।তাতে উন্নয়ন হোক আর না হোক চাষীদের সম্মতি নিয়েই জমি দিতে ইচ্ছুক হলে কাজ হবে নইলে নয়।কালনা ও শান্তিপুরে ভাগীরথী নদীতে সেতু তৈরির জন্য রাস্তা করতে যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে ইতিমধ্যেই চাষিরা জমি দিতে ইচ্ছুক এবং নোটিশ বিলির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু নবদ্বীপ সংলগ্ন ভাগীরথী নদীতে রেল ব্রিজের কাজ শেষ হয়ে কিন্তু নবদ্বীপ সংলগ্ন ভাগীরথী নদীতে রেল ব্রিজের কাজ শেষ হয়ে গেলেও জমি নিয়ে সংকটের মধ্যে পড়েছে রেল দফতর এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
ইতিমধ্যে রেলব্রিজের জন্য ৯০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন শুধুমাত্র জমি পেলেই রেলপথ বসানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে।জমি দিতে অনিচ্ছুক এলাকার চাষীরা।নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির মহিশুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষিরাই রেলপথের জন্য জমি দিতে অনিচ্ছুক।যদিও চাষীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন স্থানীয় বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ বাবু সহ অনেক জনপ্রতিনিধি।কিন্তু বরফ আজও গলেনি।
নবদ্বীপ শহর ঘেঁষা ভাগীরথী নদীতে রেল ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ যখন হয়েছে তখন রেলপথের কাজ শেষ হয়ে গেলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে যাবে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের মেলবন্ধনে।নবদ্বীপ থেকে সরাসরি কৃষ্ণনগর হয়ে শিয়ালদহ যাবার যোগাযোগের ব্যবস্থা যেমন পরিবর্তন করবে তেমনি শিয়ালদহ থেকে সরাসরি উত্তরবঙ্গের সাথে এই রেলব্রিজের যোগাযোগ আরো আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দেবে কিন্তু জমি অধিগ্রহণ নিয়ে চরম সংকট তৈরি হয়েছে।
অথচ দীর্ঘদিন ধরে ভাগীরথী নদীতে রেল ব্রিজ হোক দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সেই কাজ বাস্তবায়িত হলেও এখন চরম সংকট জমি অধিগ্রহণ নিয়ে।
তবে পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে যে তাদের তরফ থেকে বারবার চাষিদের সাথে আলোচনার করা হচ্ছে যাতে চাষিরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পেয়ে রেলপথ তৈরীর জন্য জমি দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করে তার প্রক্রিয়া অনবরত চলছে । নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হরিদাস দেবনাথ জানিয়েছেন যে,আমরা বারবার বৈঠক করছি চাষিদের সঙ্গে আশা করছি চাষিরা বুঝতে পারবেন রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে রেলব্রিজের উন্নয়নে তারা সামিল হবেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একটাই দাবি বহু ফসলি জমি তারা দিতে রাজি নয় যদিও বা উন্নয়নের স্বার্থে দিতে চান কিন্তু তাদের প্রতিটা পরিবারের তরফ থেকে কর্মসংস্থানের সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করে দিতে হবে তাহলেই মিলবে জমি। আবার অন্যসূত্রে খবর যে তারা গরীব মানুষ তাদের শেষ সম্বল রয়েছে জমিটুকু তাই কোনভাবেই জমি দিতে ইচ্ছুক নয় এমনটাও দাবি এলাকার বহু মানুষের তরফ থেকে উঠে এসেছে।তাই জমি না পেলে আদৌ কি চালু হবে নবদ্বীপ শিয়ালদহ রেলপথ প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়ির বিশেষ সংশোধনাগারের আবাসিকের আত্মহত্যা
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584