শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা মহামারি আতঙ্কে যারা মানুষের পাশে থেকে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, উল্টে তাদেরকেই বারংবার করোনার বাহক হিসাবে চিহ্নিত করে বারবার হেনস্থা করছেন মানুষ।
রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকলেই তাকে করোনা পজিটিভ বলে মনে হচ্ছে সাধারণ মানুষ জনের। কিছুদিন আগে সরশুনার এক চিকিৎসকের পরিবারকে হেনস্থা করার পর এবার হেনস্থার অভিযোগ উঠল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক স্বরাজদ্বীপ বণিকের ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা পরিজনদের।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক স্বরাজদ্বীপ বণিক কোচবিহারের ছেলে হলেও ৬ মাস ধরে ঠাকুরপুকুরে পিসির বাড়িতে থেকে পড়াশুনো করেন। তিনি কলকাতা ট্রপিক্যাল মেডিসিনে তৃতীয় বর্ষে এমডি পাঠরত। হাসপাতালের নির্দেশে করোনা আবহেও নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসা করেছেন তিনি। এরই মধ্যে তিনি নিজে সংক্রামিত না হলেও তাঁর পিসি ও ঠাকুমা করোনা সংক্রমিত হন। শনিবার সেই খবর এলাকায় ছড়াতেই বিক্ষোভ শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ আর্থিক সংকটে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপকরা
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথমে এদিন ২ ব্যক্তি আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে এলে একপ্রস্থ বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। তার পর স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এলাকা জীবাণুমুক্ত করতে এলে আরেক দফা বিক্ষোভ হয়। চিকিৎসক স্বরাজদ্বীপ বণিককে ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে তাঁর পিসেমশাইকে নানা কটূক্তি করেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, যে চিকিৎসক কোভিড হাসপাতালে চাকরি করেন, তাঁকে কেন বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। ডাক্তারকে বাড়ি ছাড়তে হবে।
এই ঘটনায় অবাক চিকিৎসক মহলের একাংশ। স্বরাজদীপের অধ্যাপক ডা যোগীরাজ রায় বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা চূড়ান্ত অমানবিক। যারা এসব বলছেন তাদের কারও প্রাণ হয়তো আমার এই ছাত্র বাঁচাবে। যারা বাঁকা চোখে দেখছে তাদের বিরুদ্ধ সেরকম ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ধরনের অমানবিক কাজ থেকে বিরত থাকুন।’ এদিকে ওই ঘটনার পর প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্বরাজদীপ। ঠাকুরপুকুর থানা থেকে তাঁকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584