কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে, সারা বছর ধরে নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

0
74

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়ের, কলকাতাঃ

বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের আবেগ হোক বা কোন সরকারি প্রকল্প, কোনও ইস্যুকেই বাদ দিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজির ১২৫তম জন্ম বার্ষিকীতে জাতীয় ছুটি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করার জন্য কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

mamata banerjee | newsfront.co
ফাইল চিত্র

এবার নেতাজির ১২৫তম জন্ম বার্ষিকী বর্ষব্যাপী উদযাপনের জন্য এক বিশেষ কমিটি গঠন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও, নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এই কমিটিতে রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ সংবিধান দিবস,সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা জলঙ্গিতে

এর পাশাপাশি, নেতাজি পরিবারের সুগত বসু, সুমন্ত্র বসু ও অমিত মিত্র থাকছেন এই কমিটিতে। এছাড়াও শঙ্খ ঘোষ, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, যোগেন চৌধুরী, জয় গোস্বামী, সুবোধ সরকার, ব্রা্ত্য বসু, আবুল বাশার থেকে শুরু করে কলকাতা, যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, অর্থসচিব, ডিজি, রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, কলকাতা পুলিশের সিপি-সহ একগুচ্ছ ব্যক্তিত্ব।

তবে এই কমিটি ঘোষণার সময় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্যকে কার্যত ইচ্ছে করেই প্রকাশ করছে না কেন্দ্রীয় সরকার। নেতাজির মৃত্যু দিন আমরা এখনও জানি না। কিন্তু তার পরিবারের সদস্য থেকে আপামর বাঙালি এই দিনটি জানতে চায়। জানতে চায় কী হয়েছে এই মহান নেতার সঙ্গে। তাঁর জন্মদিন আমরা জানি। কিন্তু মৃত্যুদিনটা সঠিক জানি না। এটা কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়েও করেনি।’

আরও পড়ুনঃ হিলিতে জাতীয় সংবিধান দিবস উদযাপন

মুখ্যমন্ত্রী আরো দাবি করেন, রাজ্য সরকারের তরফে নেতাজি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে তথ্য যা পুলিশের কাছে বা সরকারি মহাজেফখানায় ছিল, তা প্রকাশ্যে এনে দিয়েছি আমরা। তারপরেও সব তথ্য জানা যায়নি। কিন্তু আমরা মনে করছি এবছর এই নিয়ে তথ্য জানতে পারব।

কেন্দ্রকে তোপ দেগে এদিন বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়েছিল এই নিয়ে সব জানাতে পারবে, কিন্তু এখনও কিছুই জানাতে পারেনি। আমরা সব কাগজ প্রকাশ্যে এনে দিয়েছি, কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু সেটা করেনি।

যদিও মুখ্যমন্ত্রী জানান, গান্ধিজির মতই নেতাজিও সর্বভারতীয় নেতা। তিনিও দেশের জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর জয় হিন্দ ধ্বনি সারা দেশের কাছে গর্বের। তিনি স্বাধীনতার আগে থেকেই ভাবতেন স্বাধীনতার পর কীভাবে দেশ চলবে সবকিছু। তবে কেন্দ্রকে দুষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতবছর গান্ধির দেড়শো বছরে আমরা অনেক কাজ করেছি। কেন্দ্র কিন্তু কিছুই কাজের কাজ করেনি।’

আরও পড়ুনঃ কান্দিতে অফিসে ঢুকতে বাধা মহকুমা শাসককে

পাশাপাশি, বিজেপির নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন অনেকেই নিজের ইচ্ছেমতো ইতিহাস তৈরি করাচ্ছে। যাঁরা স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধীতা করেছিলেন, তাঁদের এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে। যাঁরা স্বাধীনতা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদের ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এটা ভালভাবে নিচ্ছেন না।’

কিভাবে চলবে নেতাজির ১২৫তম জন্ম জয়ন্তী বর্ষব্যাপী উৎসব?রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নেতাজির জন্মজয়ন্তী নিয়ে এই কমিটি শীঘ্রই বৈঠকে বসবে। আগামী এক বছর ধরে এই নিয়ে অনুষ্ঠান চলবে। তাঁর মানসিকতা, কথা সবই ব্লক স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়াই সরকারের লক্ষ্য।

জয় হিন্দ স্লোগান, আকাশ থেকে মাটি পর্যন্ত, বাতাস থেকে তুফান পর্যন্ত এই স্লোগান প্রখ্যাত। তিনি বিশ্ববরেণ্য নেতা। সেই কারণেই রাজ্যের পক্ষ থেকে এই বিশেষ উদ্যোগ ও সম্মান প্রদর্শন।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এভাবেই মানুষের আবেগকে হাতিয়ার করে বিধানসভা ভোটের আগে মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাইছে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here