শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করাতে এসে আচমকাই হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেল শিশু। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে খাস কলকাতায় আরজিকর হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও পরিবারের দাবি, শিশুর মৃতদেহও তাদের দেওয়া হয়নি। এমনই অভিযোগে শুক্রবার রাতে তুলকালাম হয় আরজি কর হাসপাতালে। সুবিচার পেতে শিশুটির বাবা-মা অভিযোগ দায়ের করেছেন টালা থানায়। অভিযোগ জানাবেন স্বাস্থ্য কমিশনেও।
জানা গিয়েছে, ১২ জুন পুত্রসন্তানের জন্ম দেন চন্দননগরের বাসিন্দা বাবান মণ্ডলের স্ত্রী দেবযানী মণ্ডল। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় শিশুটিকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে রেফার করা হয়। শিশুটিকে পরের দিনই ১৩ জুন আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করেন বাবা-মা। তার পর থেকে আর শিশুর দেখা পায়নি পরিবার।
যদিও হাসপাতালের নির্দেশমতো লকডাউনের মধ্যেও রোজ চন্দননগর থেকে হাসপাতালে এসে সন্তানের জন্য স্তন্যদুগ্ধ দিয়ে দিয়েছেন মৃত শিশুটির মা। তবে শিশুটির সঙ্গে তাকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সন্তানের কথা জিজ্ঞাসা করলে জানানো হয়, চিকিৎসক বলতে পারবেন। কিন্তু কোনও চিকিৎসক এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
আরও পড়ুনঃ করোনা সংক্রমনে মৃতের অন্তিমযাত্রা মাটি কাটার মেশিনে
২৬ জুন হাসপাতালের তরফে বলা হয়, ১৫ জুন তাদের সন্তানের শ্বাসকষ্টেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় দেহ সত্কার করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের এই দাবি মানতে নারাজ সদ্যজাতের বাবা-মা। তাঁদের অভিযোগ, সন্তানের মৃত্যু হয়নি। মিথ্যে কথা বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই শুক্রবার রাতে তারা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ ফেটে পড়েন।পরিবারের আরও দাবি, শিশুটির যদি এত আগেই মৃত্যু হয়ে থাকে, তাহলে এতদিন ধরে শিশুটির মা-র স্তন্যদুগ্ধ নেওয়া হচ্ছিল কেন? শিশুটির মা এতবার লকডাউনের মধ্যে হাসপাতালে এলেও কেন তাকে কিছু জানানো হয়নি?
আরও পড়ুনঃ সৎ বাবার বিকৃত যৌন লালসায় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী
পরিবারের অভিযোগ, এই নিয়ে এদিন সুপারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি নিরাপত্তারক্ষীকে দিয়ে বলে দেন, কথা বলতে পারবেন না। এরপরেই হাসপাতালে ঝামেলা শুরু হয়। শিশুর বাবা বাবুন মণ্ডলের দাবি, তাঁর সন্তান বেঁচে রয়েছে। তাকে বিক্রি করে দিয়েছেন হাসপাতালের কর্মীরা। এখন তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নামে বিজেপিও। আরজিকরে গায়েব শিশুর মার সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। তারপর অগ্নিমিত্রাদেবী বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই চিকিৎসাধীন সদ্যোজাতের মুখ মা-কেও দেখতে দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বললে বলছে, শিশু মারা গেছে। কি লুকোতে চাইছে হাসপাতাল? এর থেকে অমানবিক আর কী হতে পারে? এই নিয়ে সুপারের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। বিষয়টি নিয়ে তীব্র আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584