নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ
মোদী সরকারের শাসনকালে পাশ হওয়া সিএএ অর্থাৎ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন যে একটি অসাংবিধানিক ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি আইন সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
দেশের ২০ কোটি মুসলিমের স্থানাধিকার আজ বিপন্ন। এই বিষয়ের বিপন্নতা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন কংগ্রেসের থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)’-এর একটি রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে।

মার্কিন বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের তদারকি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস এই রিপোর্টে জানাচ্ছেন, ‘‘সিএএ-র মতো সামাজিক ইস্যুগুলি যে শুধুই মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের আন্তরিকতাকে ক্ষুণ্ণ করবে তা নয়।
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলিতে আমরা (আমেরিকা) যে মুক্ত ও অবাধ স্বাধীনতার বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছি, সেই প্রচেষ্টায় শামিল হওয়ার পথ থেকেও ভারতকে দূরে সরিয়ে দেবে।’’
আরও পড়ুনঃ নতুন এনপিআর পদ্ধতিতে কী লাগছে এবার, জেনে নিন প্রয়োজনীয় তথ্য
সরকারি ভাবে মার্কিন কংগ্রেসের রিপোর্ট না হলেও সিআরএস-এর এই রিপোর্ট বানানো হয়েছে কংগ্রেস সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মতামতের ভিত্তিতেই।
মার্কিন কংগ্রেসের থিঙ্কট্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রাচীনকাল থেকে ভারত শুধুই বিদেশি বাইরের শক্তির হাতে পরাজিত হয়েছে, বিদেশি শক্তি ভারতকে লুঠ করেছে—এই ধ্যান ধারণা হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি জনসাধারণের মধ্যে প্রসার করতে চাইছে।
রিপোর্টে এও লেখা হয়েছে, ‘‘বহু বিশেষজ্ঞের ধারণা, দেশের উত্তরোত্তর ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি থেকে মানুষের নজর অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাজনৈতিক সমর্থন ধরে রাখতে বিজেপি সরকার এখন আবেগের উপরেই গুরুত্ব দিচ্ছে। হাতিয়ার করছে ধর্মকে।’’
আরও পড়ুনঃ কেরলে ডিটেনশন ক্যাম্প হচ্ছে না, ঘোষণা বিজয়ন সরকারের
সংশোধনী নাগরিকত্ব বিলটি বেরনোর সময়ে প্রতিলিপিতে স্পষ্ট লেখা ছিল ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যে সমস্ত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সী ও শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষরা অনুপ্রবেশকারি হিসাবে এ দেশে এসেছিলেন, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই বিলের মাধ্যমে।
বিলে স্পষ্ট ভাবে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষদের বিষয়ে কোনও কথা উল্লিখিত ছিল না। বলা বাহুল্য, প্রত্যক্ষ ভাবে তাদের উপস্থিতি অস্বীকার না করা হলেও পরোক্ষ ভাবে তাদেরকে এই বিলের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে, সে বিষয়ে দ্বিমত নেই। এই আইন যে শাসক দলের হিন্দু জাতীয়তাবাদের দিকে এগোনোর নতুন পদক্ষেপ, তা কার্যত স্পষ্ট।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584