আদিবাসী ভাষায় দেওয়াল লিখন প্রচারের নয়া কৌশল

0
535

শ্যামল রায়,কালনাঃ

new Strategy of wall writing
নিজস্ব চিত্র

সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর পরই পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন ব্লকে আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক ফিরে পেতে দেওয়াল লিখনকেই হাতিয়ার করলো শাসক দল।পূর্ব বর্ধমান আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধির হাত দিয়ে সাঁওতালী ভাষায়,অলচিকি হরফে নির্বাচনী প্রচারে দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু হলো। ‘ভারত তেয়ার লাগিৎ,মমতা ব্যানার্জী জিৎকৈর , প্রণব রায় জিৎকৈর।সুনীল কুমার মন্ডল নুওয়া চিহ্নরে ভোট এমপে’ কিন্তু সাধারণ বাংলাভাষীরা তা পড়তে পারলেও ঠিক বোধগম্য হওয়ার কথা নয়।

তবে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এখন দেওয়ালে দেওয়ালে এইভাবেই লোকসভার ভোটের প্রচার হচ্ছে।সঙ্গে প্রতীক সহ প্রার্থীর নামও দেওয়া থাকছে। আদিবাসীদের মন পেতে ভাষাতেই ভরসা বলে মনে করছেন অনেকেই।এই ব্লকে সাঁওতালি ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা বেশি।আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় তাই ওই সম্প্রদায়ের মাতৃভাষাতেই প্রচারের কৌশল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।দেওয়াল লিখন,পোস্টার-ফেস্টুন, সবেতেই সাঁওতালি ভাষার ব্যবহার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ প্রার্থীর সমর্থনে কোলাঘাটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রচার মিছিল

এমনকী নেতারা পাড়ায় পাড়ায় ছোট সভায় বা বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারের সময়ও একইভাবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে সাঁওতালিতেই জনসংযোগ করছেন।এই এলাকা থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সহ সভাধিপতি দেবু টুডু।গতবারও এই ব্লক থেকেই তিনি জিতেছিলেন।তিনি নিজেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ।

কেন প্রচারে সাঁওতালি? এই ব্যাপারে সহ সভাধিপতি বলেন , “মাতৃভাষার সঙ্গে মানুষের নাড়ির টান।মাতৃভাষার জন্য কত আন্দোলন হয়েছে।কতজন শহিদ হয়েছেন।সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠন থেকে সরকারি কাজে ব্যবহারের দাবিতেও আন্দোলন হয়েছে।রাজ্য সরকার বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষা চালু করেছেন।

ভোটের প্রচারেই বা থাকবে না কেন?” তৃণমূলের দাবি, মাতৃভাষায় কথা বললে মানুষের অনেক কাছাকাছি পৌঁছন যায়। মানুষকে আপন করে নেওয়া যায়।সেই কথা মাথায় রেখেই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সাঁওতালি ভাষাতেই প্রচার করা হচ্ছে। তাতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন তাঁদের কথা সহজেই বুঝতে পারছেন।নিজেদের ভাষা কথা শুনে তাঁরা খুশিই হচ্ছেন।আমরা তোমাদেরই লোক,মাতৃভাষাতেই এই বার্তাই পৌঁছে দিচ্ছে তৃণমূল।

এই পরিস্থিতিতে আসন্ন লোকসভা ভোটে ‘আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক’ ফিরে পেতেই শাসক দলের এই কৌশল।সেকারণেই পূর্ব বর্ধমানে আদিবাসী গ্রাম গুলিতে সাঁওতালী ভাষা আর অলচিকি হরফে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লেখার কাজ তৃণমূলের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে বলে জেলা রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।

দেওয়াল লেখার ফাঁকে তৃণমূল কর্মীরা বলেন, প্রাথমিক স্তর থেকে কলেজ এখন অলচিকা শিক্ষার সুযোগ তৈরী হয়েছে।সেকারণেই গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই এই দেওয়াল পড়তে পারবেন।তৃণমূল ব্লক সভাপতি প্রণব রায় জানিয়েছেন যে, “সব সময় বাংলা ভাষায় আমরা দেওয়াল লিখন লিখে থাকি যা কিনা অধিকাংশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা বুঝতে পারেন না জানতে পারে না তাই আমরা এবারে আদিবাসী ভাষায় ভোটের প্রচার দেওয়ালে লিখছি।” এই নয়া কৌশল আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক তৃণমূলের কাছে কতটা ফিরিয়ে আনতে পারে সেটাই এখন দেখবার।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here