শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক নেতাদের সাহায্যে পরিকল্পনার ঘুঁটি সাজাতে চাইছে তৃণমূল। কিন্তু শাসক দল যাতে সেই পরিকল্পনায় সফল না হয়, তার জন্য সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক দলও।
জুলাই মাসেই দীর্ঘ ১১ বছর জেলে কাটানো জঙ্গলমহলের জনসাধারণের কমিটির তৎকালীন নেতা ছত্রধর মাহাতোকে একেবারে দলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দায়িত্ব পেয়ে সেই মতো মানুষকে সংগঠিত করার কাজও শুরু করে দিয়েছেন ছত্রধর। আর ঠিক সেই সময়েই সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো হত্যা ১১ বছর পুরনো মামলায় তাকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাল এনআইএ।
আরও পড়ুনঃ মদনের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন লকেটের দাদা
যদিও রাত পর্যন্ত এই বিষয় সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি বিচারক। এদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আদালতের ভিতরে প্রবেশ করেননি ছত্রধর। গাড়িতেই প্রায় ৩ ঘণ্টা বসেছিলেন। তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানোর পরেই তিনি ধুম জ্বর ও শ্বাসকষ্ট জনিত অসুস্থতায় পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় এর আগে একাধিক বার ছত্রধর মাহাতোকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনআইএ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র চার সদস্যের একটি টিম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনিতে অবস্থিত সিআরপিএফের ২০৭ নম্বর কোবরা ব্যাটেলিয়নের ক্যাম্পে গিয়েও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
আরও পড়ুনঃ ধন্য পিতৃতন্ত্র! বলিউডের শুধুমাত্র মহিলারাই ড্রাগখোর আর ছেলেরা শুধুই রান্না করেনঃ মিমি
২০০৯ সালের ১৪ জুন লালগড়ে সিপিএম কর্মী প্রবীর মাহাতো খুন এবং ২৭ সেপ্টেম্বর জেল বন্দী ছত্রধর মাহাতোর মুক্তির দাবিতে ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা স্টেশনে ভুবনেশ্বর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস আটক করার ঘটনার পুনর্তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ।
সেই সূত্রে সম্প্রতি ২৮ ও ২৯ শে আগস্টও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনির কোবরা ক্যাম্পে ছত্রধর মাহাতোকে জেরা করা হয়েছিল। এনআইএ সূত্রের দাবি, ফেব্রুয়ারিতে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরও ছত্রধরকে দুবার ডাকা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ তানিয়া পারভিনের তথ্য পাচারের নেটওয়ার্ক জানতে এবার বেঙ্গালুরু পাড়ি এনআইএ’র
করোনা ও লকডাউনের প্রসঙ্গ তুলে এর আগে তিনি আসেননি। পরে অবশ্য তাকে তিন দফায় জেরা করা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি। সেই কারণে এবার তাকে হেফাজতে নিয়ে তারা জেরা করতে চান।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ৪ জেলার জঙ্গলমহলে যে ছত্রধরই তৃণমূলের অন্যতম ফ্যাক্টর হতে পারেন, তা মানছে বিরোধী দল বিজেপিও। বিশেষত জেল থেকে বেরোনোর পর তার কার্যকলাপে চিন্তার ভাঁজ আরও বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বহু পুরনো মামলায় ছত্রধরকে এনআইএ-র হেফাজতে চাওয়ার মধ্যে রাজনৈতিক রং খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই।
যদিও ছত্রধরের দাবি, ‘ওই দুটি মামলায় যে আমি জড়িত নই, তা ইতিমধ্যে প্রমাণও হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পর আমার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ঢল দেখে ভয় পাচ্ছে বিজেপি ।তাই আমাকে আটকাতে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584