লকডাউনে যোগান কমছে শিশুখাদ্যের, সমস্যায় অভিভাবকরা

0
46

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

করোনার জেরে প্রশাসন অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মজুতের কথা বললেও দিন এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে টান পড়ছে সমস্ত রকম পণ্যে। অনেক পণ্য নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে কালোবাজারিও। দেখা গিয়েছে, সমস্ত দ্রব্যের সঙ্গে শিশুখাদ্যেও থাবা বসিয়েছে এই করোনা। লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই পণ্য পরিবহণ কমে যাওয়ার ফলে মাল মজুত থাকলেও যোগান পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।

baby food | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

প্রসঙ্গত, শিশু খাদ্য বরাবরই অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যের মধ্যে পরিগণিত হয়। আমাদের দেশে বহু শিশু আছে যারা ঠিকমতো মাতৃদুগ্ধ পায় না। যার ফলে সেই শিশুকে খাওয়ানোর প্রয়োজন হয় কৃত্রিম দুধের। এছাড়াও চিকিৎসকদের পরামর্শ বা নিয়মিত বেড়ে ওঠার সঙ্গে ছোট শিশুদের বেশ কিছু বিশেষ রকমের গুঁড়ো দুধ যেমন নান ,সেরেলাক, ল্যাকটোজেন, ইত্যাদি জাতীয় দুধ খাওয়ানো হয়।

আরও পড়ুনঃ প্রদীপ জ্বালাতে সর্তকতার প্রচার অগ্নিনির্বাপণ দফতরের

কিন্তু ঐ শিশু খাদ্য গুলি পেতে যে এখন অনেকটাই বেগ পেতে হচ্ছে, এমনটাই জানাচ্ছেন বাবা মা-রা।একই দোকানে সমস্ত কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। নইলে আগে থেকে দোকানে অর্ডার দিয়ে রাখতে হচ্ছে। আবার অর্ডার দিয়েও সবসময় ওই শিশুখাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। হলে ঘরোয়া খাদ্য দিয়ে কোনভাবে চালিয়ে নিতে হচ্ছে বাবা-মায়েদের। শুধু তাই নয় শিশুদের নিয়মিত অনেক ভ্যাকসিন এবং ভিটামিন ড্রপ নিতে হয়। কিন্তু লকডাউন এর কারণে সমস্ত রকম পরিষেবা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।

আড়িয়াদহ এর বাসিন্দা চঞ্চল পাইন কিছুদিন আগেই বাবা হয়েছেন। তার কথায়, এলাকার বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে সমস্ত বেবি ফুড জোগাড় করতে পারছি না। এমনকি দুধের বোতলও মার্কেটে অপর্যাপ্ত। মানিক তলার বাসিন্দা আরেক বাবা সমীর সাউয়ের কথায়, ‘বাচ্চা অসুস্থ হলে এখন ডাক্তার পর্যন্ত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই খুব সাবধানে বাচ্চার খেয়াল রাখতে হচ্ছে আমাদের।’

এই বিষয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, তাদের কাছে যতটুকু ছিল ,ততটুকু সবাইকে দিয়েছেন। মূলত ডিস্ট্রিবিউটর কিংবা হোলসেলাররা আসছেন না। তাদের কাছে ফোন করলেও কোন ভাবে মালপত্র সরবরাহ করতে রাজি হচ্ছেন না।

যার ফলে বাজারে অন্ততপক্ষে ৪০%-৫০% বেবি ফুডের কম সরবরাহ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, বেশিরভাগ ডিস্ট্রিবিউটর হাউসগুলো বন্ধ রয়েছে। বড়বাজারে বাগরি মার্কেট ও মেহতা বিল্ডিংয়ে যে সমস্ত বেবি ফুডের পাইকারি বিক্রেতা রয়েছেন। তাদের অনেকে দোকান খোলার চেষ্টাও করেছেন।

কিন্তু তাদের বক্তব্য, করোনা আক্রমণের ফলে শ্রমিকরা বাড়ি চলে গেছে। যার জন্য গুদাম থেকে মালপত্র বের করার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও পরিবহন বন্ধ থাকার জন্য শ্রমিকরা কাজে আসতে পারছেন না।

পাইকারি বিক্রেতারা আরও জানান ,অন্য কোন গাড়িতে করে নিয়ে আসতে গেলে এবং অন্য কোন শ্রমিকদের দিয়ে মাল বহন করাতে গেলে তাতে অনেক বেশি খরচ পড়ে যাচ্ছে। বেবি ফুড খুব কম লাভে বিক্রি হয়। তাতে অনেকটা বেশি খরচ। লভ্যাংশ থাকছে না। প্রয়োজনে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

বেবি ফুড এর গায়ে লেখা দাম এর থেকে বেশি নিলেই , সরকারি আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার। যার ফলে ঐ সমস্ত পাইকারী বিক্রেতারা বেবি ফুড আনতেও সাহস করছে না। এইভাবে যদি লকডাউন চলতে থাকে, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি বাজারে শিশু খাদ্যের ভয়ঙ্কর অভাব দেখা দেবে।

বিশেষ করে খুব অসুবিধায় পড়বেন সদ্যজাত থেকে ১ বছরের মধ্যে শিশুরা। আর সেই চিন্তাতেই কপালে ভাঁজ পড়েছে শিশুদের বাবা-মার। দোকানদার এবং পাইকারি বিক্রেতাদের দাবি, সরকার যাতে এই অত্যাবশ্যকীয় জিনিসগুলি সরবরাহের জন্য,পরিবহনের ব্যবস্থা করেন, তবে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here