নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
২০২০ সালের ২৯ জুলাই, বিশ্ব বাঘ দিবসে ভারত সরকার যে পরিসংখ্যান সামনে আনল তা দেখে অনেকেই বলছেন, গত এক যুগে আমূল পরিবর্তন হয়েছে পরিস্থিতির। হিসেব কষে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বে যা বাঘ আছে, তার ৭০ শতাংশ রয়েছে ভারতে। এই মুহূর্তে দেশের ৫০টি ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পে বাঘের সংখ্যা দু’হাজার ৯৬৭টি। যা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক বলে মত বিশেষজ্ঞদের। পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ভারতে বাঘ বেড়েছে ৬ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে দেশে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্প ছিল ৯টি। সেটা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০টি।
বর্তমানে করোনা আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। করোনা মোকাবিলায় লাগাতার লকডাউন জারি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। এহেন পরিস্থিতিতে বন্যপ্রাণীদের শহরের রাস্তাতে নেমে আসতে দেখা গিয়েছে। তারই মধ্যে বাংলার জন্য সুখবর দিয়েছিল সুন্দরবন।
সেখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৬। এ বছর ৮টি বাঘ বেড়েছে সেখানে। কিন্তু গোটা দেশের নিরিখে বলতে হলে, পশ্চিমবঙ্গে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির হাল রীতিমতো শোচনীয়। ফোর্থ অল ইন্ডিয়া টাইগার এস্টিমেশন ২০১৮ যে ৬০০ পাতার রিপোর্ট পেশ করেছে, সেই অনুযায়ী বাঘের সংখ্যার শীর্ষে রয়েছে উত্তরাখণ্ডের করবেট টাইগার রিজার্ভ। সেখানে রয়েছে ২৩১টি বাঘ।
কিন্তু দেশের ৫০টি টাইগার রিজার্ভের অন্যতম মিজোরামের ডাম্পা, পশ্চিমবঙ্গের বক্সা ও ঝাড়খণ্ডের পালামৌ ব্যাঘ্র প্রকল্পের অবস্থা শোচনীয়। বর্তমানে সেখানে একটিও বাঘ অবশিষ্ট নেই বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তবে, রিজার্ভ ফরেস্ট ছাড়া ভারতে বাঘ রয়েছে ১৯২৩টি। রিপোর্ট মোতাবেক, কর্নাটকের বান্দিপোড়া ও নাগারহোলে ১২৬ ও ১২৭টি বাঘ রয়েছে। আবার অসমের কাজিরাঙা ও মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড়ে রয়েছে ১০৪টি করে বাঘ। ৬০০ পাতার সেই রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে, ৩০ হাজার হাতি, ৩ হাজার একশৃঙ্গ গন্ডার, ৫০০টির বেশি সিংহ রয়েছে দেশে।
আরও পড়ুনঃ আগামী ৪৮ ঘন্টায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস উত্তরবঙ্গে, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গেও
এদিকে, বক্সা পশ্চিমবঙ্গের জন্যে রীতিমতো খারাপ খবর নিয়ে এসেছে। গত বছর যে বাঘসুমারি করা হয়েছিল তাতে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৮৮। এ বছর সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৯৬। বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিতে এটা রেকর্ড ঠিকই। কিন্তু বক্সা বাঘ-শূন্য হয়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের কাছে তা রীতিমতো চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে এক বছরে সুন্দরবনে সাতটি বাঘ বেড়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ৭ আগস্ট অনলাইনে হবে সিইটি, জেইম্যাট পরীক্ষা
সুন্দরবনে ট্র্যাপ ক্যামেরার সাহায্যে বাঘের গণনা হয়। প্রতিটি বাঘের গায়ে থাকা ডোরাকাটা দাগ দেখে বাঘ শনাক্ত করা হয়। ফলে একই বাঘকে দু’ বার গণনা করা হয় না। সেই হিসেবে সুন্দরবন খুবই আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু বক্সা সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।
ওডিশার অবস্থাও শোচনীয়। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে একটিও বাঘ বাড়েনি সেখানে। ২০০৬ সালে সেখানে ছিল ৪৫টি বাঘ, আর ২০১৮ সালে বাঘের সংখ্যা কমে হয়েছে মাত্র ২৮। রাজ্যের নিরিখে সবচেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। সেখানে রয়েছে ৫২৬টি বাঘ। কর্নাটকে ৫২৪ ও উত্তরাখণ্ডে রয়েছে ৪৪২টি বাঘ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584