পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিশ্বভারতীতে পৌষ মেলার শেষে ব্যবসায়ীদের উপর উপাচার্যের মস্তানির বিতর্ক থামতে না থামতেই নতুন বিতর্কের পালক জুড়ে গেল বিশ্বভারতীর মুকুটে। বুধবার বিশ্বভারতীতে এসে পৌঁছায় পরিবেশ দফতর থেকে ১০ লক্ষ টাকা ফাইনের নোটিশ। যদিও বিশ্বভারতী জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার জানিয়েছেন এ ধরনের নোটিশ তাদের হাতে এসে এখনো পৌঁছায়নি।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেছেন বিশ্বভারতীকে এই ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তা আগে থেকেই আমরা আন্দাজ করতে পারছিলাম কারণ পৌষ মেলাকে দূষণমুক্ত করতে জাতীয় পরিবেশ আদালত যে যে নির্দেশিকা জারি করেছিল তা কোথাও মানা হয়নি বিশ্বভারতীর তরফে। ১৮/১২/২০১৯-এ রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিবের ঘরে যে বৈঠক হয়েছিল সে বৈঠকে মুখ্য সচিব রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সচিব বীরভূমের জেলাশাসক বীরভূমের পুলিশ সুপার বিশ্বভারতীর কর্মসচিব উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে বিশ্বভারতীর তরফে কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায়কে অনুরোধ করা হয়েছিল আসন্ন পৌষ মেলা ঘিরে যাতে মেলার মাঠ প্রাঙ্গন কোনভাবেই দূষিত না হয় সেদিকে যাতে বিশ্বভারতী যত্নবান হয়।
সদ্যসমাপ্ত পৌষ মেলায় বাস্তব চিত্র ছিল একেবারে উল্টো, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্বভারতীর ব্যবস্থাপনায় প্রচুর খামতি নজরে আসে পরিবেশ দফতর থেকে মেলায় ঘুরতে আসা তদন্তকারী দলের সদস্যদের কাছে। ২৪ এবং ২৫ শে ডিসেম্বর , দুদিন পৌষ মেলা ঘুরে বিভিন্ন রকমের সমস্যার কথা তদন্ত রিপোর্টে তুলে ধরেন পরিবেশ দফতরের আধিকারিকরা, যেমন মেলার মাঠে বহু খাবারের দোকান ছিল যারা কয়লা এবং আগুন নিয়ে ব্যবসা করেছে, শৌচাগার নিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থা, বায়ো টয়লেট যথেষ্ট পরিমাণে রাখা ছিল না, মেলার চারদিন শৌচাগার গুলো পরিষ্কার করা হয়নি, মহিলা শৌচাগার গুলোর কোন নিরাপত্তা ছিলনা, শৌচাগার ব্যবহারের পর বাইরে থেকে জল নিয়ে যাবার ব্যবস্থা ছিল না, অগ্নিনির্বাপণ নিয়ে বিশ্বভারতী যে ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল তা নিতে বিশ্বভারতী ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুনঃহিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুন উদ্ধার ফালাকাটায়
পরিবেশ দফতর থেকে ১০ লক্ষ টাকা ফাইনের যে চিঠি বিশ্বভারতীকে পাঠানো হয়েছে সেই চিঠিতে বিশ্বভারতীর কর্মসচিবকে উদ্দেশ্য করে পরিষ্কার লেখা হয়েছে কেন এত পরিমান টাকা জরিমানা করা হয়েছে বিশ্বভারতীকে।পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যদি আগামী দিনে বিশ্বভারতীর দূষণ ও কঠিন বর্জ্য পদার্থ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয় আগামী দিনে আরো বড় আর্থিক জরিমানা দিতে হতে পারে৷ আশ্রমিক সুবোধ মিত্র জানিয়েছেন বর্তমান উপাচার্য বিশ্বভারতীকে কলঙ্কময় করে তুলেছেন ওনার কার্যকালে বিশ্বভারতী তথা পৃথিবীর মানুষকে আর কত কলঙ্কিত কাজ দেখতে হবে তা ভেবে আমরা প্রবীণ আশ্রমিকরা শিঁউরে উঠছি। বিশ্বভারতীকে জরিমানা দিতে হবে এটা ভেবে ক্ষোভে দুঃখে চোখে জল চলে আসছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584