কন্যাকে অপহরণে বাধা, জামাই – এর ধাক্কায় মৃত্যু হল বৃদ্ধা শাশুড়ির

হরষিত সিংহ, মালদহঃ

পারিবারিক বিবাদের জেরে বাপের বাড়ি চলে আসায় স্ত্রীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। মেয়েকে বাচাঁতে গিয়ে জামাইয়ের হাতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল অপহৃত মহিলার বৃদ্ধা মায়ের। মালদহের কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির চৈতন্যটোলা গ্রামের ঘটনা । শনিবার গভীর রাতে আশঙ্খাজনক আবস্থায় কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। ঘটনায় অভিযুক্ত জামাই সহ চার জনের বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানালে তদন্তে নামে পুলিশ।

পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে মৃত বৃদ্ধার নাম নির্মলা সরকার(৬০)। স্বামী সত্যরঞ্জন সরকার। বাড়ি গোলাপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির চৈতন্যটোলা গ্রামে। তাদের চার মেয়ে ও এক ছেলে। সমস্ত ছেলে মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । তাদের এক মেয়ে স্নিগ্ধা মন্ডলের সঙ্গে প্রায় বার বছর আগে বিয়ে হয় গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দা বুদ্ধদেব মন্ডলের সঙ্গে। স্নিগ্ধা ও বুদ্ধদেব এর দুই ছেলে মেয়ে রয়েছে। অভিযোগ বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে স্নিগ্ধার উপর বিভিন্ন অজুহাতে মানসিক ও শারিরীক অত্যাচার করত স্বামী বুদ্ধদেব। বেশ কয়েকবার এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বোঝাপড়া হয়। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। গত কয়েক মাস ধরে অত্যাচার ও মারধোড়ের ঘটনা বাড়তে থাকায় বাবার বাড়ি চলে আসে স্নিগ্ধা। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে বিবাহ বিচ্ছেদ করার সিধান্ত নেয়। সেই কথা স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকেদের জানায়। কালি পুজোর রাতে কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসে বুদ্ধদেব মন্ডল। সেই সময় বাড়িতে ছিল তার স্ত্রী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ী। অভিযোগ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বৃদ্ধ শ্বশুরকে ঘরে বন্দি করে দেয় বুদ্ধদেব । তার স্ত্রী স্নিগ্ধাকে জোর করে গাড়িতে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাতে বাধা দেয় বৃদ্ধা নির্মলা সরকার। তখন তাকে মারধোড় করে অভিযুক্ত জামাই। গাড়ি চলতে বাধা দিলে বৃদ্ধাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে স্নিগ্ধাকে নিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে শনিবার চিকিৎসকেরা তাকে কলকাতায় রেফার করেন। কলকাতা নিয়ে যাওয়া পথে গভীর রাতে মৃত্যু হয় ঐ বৃদ্ধার। পরিবারের লোকেরা দেহটি ফিরিয়ে নিয়ে আসে মালদহ মেডিকেল-এর মর্গে। এদিকে কালী পুজোর রাত থেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছে মৃতার মেয়ে। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ তাকে অপহরণ করে রাখা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত জামাই বুদ্ধদেব মন্ডল সহ তার বন্ধু বিফল মন্ডল ও দূর্যোধন মন্ডল সহ মোট চার জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে গোলাপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।