রাতভর ৮ হাসপাতালে ঘুরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বাঘা যতীনের যুবতীর

0
262

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

হাসপাতালগুলি রোগী প্রত্যাখ্যান করলে মুখ্যমন্ত্রী যতই কড়া ব্যবস্থা থেকে লাইন্সেস হুঁশিয়ারি দিন, তাতে বিন্দুমাত্র পরোয়া নেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলির। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ধরে ঘুরে শহরের পর পর ৮ টি হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন কলকাতার বাঘা যতীন এলাকার বাসিন্দা পিয়ালি সরকার। করোনা নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও এতগুলি হাসপাতাল ঘুরেও কোনওভাবেই ওই যুবতীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারল তাদের পরিবার।

Piyali Sarkar | newsfront.co
পিয়ালি সরকার।ফাইল চিত্র

জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন এক সন্তানের মা পিয়ালি। বাঘা যতীন হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় চিকিৎসক তাঁর করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া যায়। এর পর তাঁকে নিউমোনিয়া আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করেন চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। যুবতীর পরিবারের দাবি, তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও নিউমোনিয়ার কারণে তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছিল।

এরপরই ওই যুবতীকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য পরিবারের তরফে শুরু হয় প্রাণপণ চেষ্টা। পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শুরু করে সারারাত ধরে তারা দৌড়তে থাকেন। কিন্তু কোনও হাসপাতালেই শয্যার ব্যবস্থা করতে পারেননি। প্রথমে তারা যান অ্যাপেক্স হাসপাতালে। তারপর একে একে পিয়ারলেস, মেডিকা, ঢাকুরিয়া আমরি, এমআর বাঙুর, অ্যাঞ্জেল নার্সিংহোমেও দৌড়ে যান।

কিন্তু সব জায়গাতেই ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল। তারপর বাঘাযতীনের আইরিস হাসপাতালে এসে পৌঁছতে পৌঁছতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় ওই যুবতীর। সেখানে তাঁকে আধঘন্টা অক্সিজেন দেওয়া হলেও শয্যার অভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ওই যুবতীর পরিবার আসে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।

আরও পড়ুনঃ নয়া মেশিনের সাহায্যে দিনে ২ হাজার করোনা পরীক্ষা, ২৪ ঘন্টায় রিপোর্ট!

পরিবারের দাবি, ১৫টি নার্সিং হোমেও পিয়ালিকে ভর্তির জন্য ফোন করা হয়েছিল, কিন্তু জায়গা মেলেনি। শেষে শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ বাঘা যতীন হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া গেলে অক্সিজেন দেওয়া শুরু হয়।

অক্সিজেন চলা অবস্থায় ২০ মিনিট পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সেখানে ভর্তি করা যাবে না। এর মধ্যে ঠাকুরপুকুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করে অ্যাম্বুল্যান্স আনায় ওই পরিবার। ততক্ষণে ভোর পাঁচটা বেজে গিয়েছে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে হেঁটে অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠামাত্রই যুবতী নিস্তেজ হয়ে পড়েন। গাড়িতে ওঠার সময় তিনি পড়ে যান। আর তিনি সাড়া দেননি।

আরও পড়ুনঃ ৭ আগস্ট রাজ্য জয়েন্টের ফল প্রকাশিত হবেঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়

এর পরেই ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুর ৫ ঘণ্টা পরে পিয়ালির শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খবর নিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে ফোন গিয়েছিল বলে জানিয়েছে মৃতের পরিবার। তবে সেখানেও যুবতী করোনা পজিটিভ ছিলেন কি না তা জানতে চাওয়ার পরে উত্তর দিতেই ফোন কেটে দেওয়া হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here