শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
দেহের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতায় শুধুমাত্র করোনাকে হারিয়েই সম্পূর্ণ যুদ্ধ জয় করে উঠতে পারছেন না করোনাজয়ীরা। সুস্থ হওয়ার পরেও ৫ জনের মধ্যে একজন করোনাজয়ীর হৃদয়ে জোরদার হানা দিচ্ছে করোনা। অতর্কিত সেই আঘাত সহ্য করতে না পেরে অনেক সময়ে মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের, অনেককে আবার নিতে হচ্ছে হাঁপানির ওষুধ। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলা হচ্ছে ‘হ্যাপি হাইপক্সিয়া’। চিকিৎসকদের দাবি, অনেক সময়ে মৃত্যু না হলেও এই ধাক্কা সইতে মানুষের লেগে যাচ্ছে কয়েক মাস।
কিন্তু সমস্ত কিছু ছেড়ে হৃদয়ের প্রতি এত টান কেন করোনার? চিকিৎসকদের দাবি, কোভিড নেগেটিভ হওয়ার পরও প্রায় ৭৮ শতাংশ রোগীর বুকে ব্যথা থেকে হার্ট রেট ওঠানামার মতো সমস্যা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে করোনা আক্রান্তের কোভিড রক্তে যে অক্সিজেনের মাত্রায় টান পড়ে শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি হয়।
এই সমস্যা ধরা পড়তে দেরি হলে হৃদয়ের পেশিগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে দুর্বল হয়ে সক্রিয়তা কমে যায় যাকে বলা হয় ‘হাইপক্সিক মায়োকার্ডিয়াল ইনজুরি’। যার ফলে স্বাভাবিকের থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে হৃদয়। ধমনীর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা অনেকটা বেড়ে যায়। এর ফলে হৃদয়ের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ খরচ নিয়ে সমস্যায় বাড়ি থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ বন্ধ শহরে
কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. কুণাল সরকার বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের নাকে গন্ধ বা জিভে স্বাদ চলে যাওয়ার মতো ঘটনা তো ঘটছেই। একই সঙ্গে ফুসফুসের মতো হার্টেও এভাবেই বিপদের সৃষ্টি করছে নোভেল করোনা। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ধীমান কাহালি জানিয়েছেন, প্রতি পাঁচ জন কোভিড রোগীর একজনের হার্টের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। অনেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আরও পড়ুনঃ মৃত আমেরিকায় প্রথম করোনা আক্রান্ত পোষ্যকুকুর
অর্থাৎ শ্বাসকষ্ট, জ্বরের মতোই হৃদরোগও কোভিডের অন্যতম উপসর্গ হিসাবে দেখা দিচ্ছে। আরও বিপদের কথা, কোভিডমুক্ত হওয়ার পর শ্বাসকষ্ট কমলেও হার্টের সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। যা থেকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট পর্যন্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে একমাত্র রোগী যদি নিজে থেকে সচেতন হোন এবং প্রতি মুহূর্তে যদি চিকিৎসক তার অবস্থা সম্পর্কে অবগত করেন, তাহলেই একমাত্র বিপদ অনেকাংশে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584