নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
মঙ্গলবার রাতে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের বলপাই অঞ্চলের গয়লাপুকুর এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সবং থানার পুলিশ বলপাই গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে বয়লাপুকুর শ্মশান থেকে এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে পিটিয়েই খুন করা হয়েছে ওই যুবককে।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান সবং থানার ওসি সুব্রত বিশ্বাস এবং অন্যান্য আধিকারিকেরা। মৃতদেহ উদ্ধার করার পর জায়গাটি গিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে তদন্তের স্বার্থে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত যুবকের নাম খোকন জানা। বয়স আনুমানিক ২৬ বছর। যে জায়গায় মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেখান থেকে মাত্র আড়াই তিন কিলোমিটার দূরেই মৃত যুবকের বাড়ি, সবং থানার গোড়া গ্রামে। ওই যুবক বিবাহিত বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে বয়লাপুকুর শ্মশানের শ্মশানযাত্রীদের জন্য নির্মিত বিশ্রাম ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় যুবকের মৃতদেহটি উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুনঃ নবগ্রামে আত্মঘাতী ষাটোর্ধ্ব মহিলা
ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একটি মোটা ভারি গাছের ডাল পাওয়া গেছে যার এক অংশে রক্তের দাগ রয়েছে যা থেকে বোঝা যাচ্ছে ভীষণ ভাবে পেটানো হয়েছে যুবককে। কী উদ্দেশ্য, কেনই বা ওই যুবককে মারা হল, কোথা থেকে ধরে আনা হল যুবককে তার অনুসন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। সূত্রে জানা গেছে যুবকের চুরির অভ্যাস ছিল এবং একাধিকবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে সে। একবার সাইকেল চুরি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছিল ওই যুবক। পাশাপাশি মদ্যপ হিসাবেও এলাকায় পরিচিত ছিল সে। কিন্তু তারপরেও যে বিষয়টা উঠে আসে তা হল ভয়ানক ভাবে যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনা।
আরও পড়ুনঃ প্রেমিকাকে অ্যাসিড আক্রমণ! ধৃত প্রেমিক, চাঞ্চল্য কালনায়
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন “এলোপাথাড়ি নয় রীতিমত সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে মারা হয়েছে যুবককে। বেঁচে থাকলেও সে যাতে ভাল ভাবে হাঁটতে না পারে কোনও দিন সেই জন্য দুটো হাঁটুই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ভেঙে দেওয়া হয়েছে হাতও। পরে হয়ত ওই ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের মনে হয়েছে যুবককে বাঁচিয়ে রাখা যাবেনা তাই মাথাতেও আঘাত করা হয়েছে। যুবক অপরাধী হতেই পারে কিন্তু তার জন্য আইন রয়েছে। নৃশংস ভাবে পিটিয়ে মারা সমর্থন করা যায়না। দোষীদের খোঁজ চলছে।”
আরও পড়ুনঃ একশো দিনের কাজের টাকা না পেয়ে তুফানগঞ্জে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ শ্রমিকদের
যুবক কি চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল নাকি তাকে ডেকে আনা হয়েছিল মারার উদ্দেশ্যে? একক ব্যক্তি ওই খুন করেছে নাকি একাধিক ব্যক্তি এই খুনে জড়িত? এই সব নানান প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতেই তন্নতন্ন করে বিভিন্ন নিদর্শন সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন সবং থানার ও.সি। অপেক্ষা করা হচ্ছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য।
পরিবারের লোকেরা অভিযোগ করেছেন খোকনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সবং থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সবং থানার পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584