শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
তিন ভিন্ন মতাদর্শের রাজনৈতিক দল হয়েও কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে বৈঠকে অভিযোগ যেন মিলে গেল তিন প্রধান বিরোধী দলের। শনিবার দুপুরে নবান্নের বৈঠকের আগে তাজ বেঙ্গলে পর্যায়ক্রমে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। জানা গিয়েছে, তিনটি দলই আবেদন করে, সুপার সাইক্লোন আমপান বিধ্বস্ত এলাকার পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সাহায্য যাতে তৃণমূল কংগ্রেস দল লুঠ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করুক কেন্দ্রীয় দল।
শুক্রবার আমফান বিধ্বস্ত দুই চব্বিশ পরগনা ঘুরে দেখে কেন্দ্রীয় টিম। শনিবার কেন্দ্রীয় টিমের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, আব্দুল মান্নানরা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “একটা মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েবসাইট করা হোক যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তাঁদের অভিযোগটা করতে পারেন। বিডিও , পঞ্চায়েত অফিস– কোথাও অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও ক্ষতিগ্রস্তদের অনলাইনে ক্ষতিপূরণের আবেদন আবেদন করার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানান।”
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রের টাকা নিয়ে দূর্নীতি করছে তৃণমূল, কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগ দিলীপের
তিনি বলেন, এই বিপর্যয় রাজ্যের একার পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রের সাহায্য দরকার। সেই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারকে পালন করতে হবে। কিন্তু দিল্লিকে এও নিশ্চিত করতে হবে আসল ক্ষতিগ্রস্তদের কাছেই যেন টাকা যায়। তার তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তৃণমূলের নেতারা যেন গরিবের টাকায় থাবা বসাতে না পারে। তৃণমূলের ছুটকো নেতার পকেটে যেন ত্রাণের টাকা না যায়। সাগরদ্বীপ, নামখানা-সহ বাদাবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও সরকার ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ করেন যাদবপুরের বিধায়ক সুজনবাবু। তবে স্বচ্ছতা রাখতে বিজেপির অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর দাবি প্রসঙ্গে সহমত নন তিনি।
সুজন বলেন, “একাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর পক্ষপাতী নই। এটা সমাধান নয়। ১০০ দিনের কাজে যেমন টাকা ভাগাভাগি হয় তেমন টাকা ভাগ হয়ে যাবে। তাই সরকার ওয়েব সাইটে ক্ষতিগ্রস্তদের বিস্তারিত তথ্য জানাক।”
কেন্দ্রের দেওয়া টাকা ঠিক মতো বিলি হচ্ছে কিনা, বাঁধ মেরামতের কাজ কী ভাবে হচ্ছে তা দেখতে এক বছরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করার দাবিও জানায় বিজেপি। কংগ্রেসের তরফে সোমেন মিত্র, আবদুল মান্নানরাও কেন্দ্রীয় টিমকে বলেন, ‘কাটমানি যাতে শাসকদল না খেতে পারে তার বন্দোবস্ত করতে হবে। আমপান বিপর্যয়কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা হোক। যাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এনজিও আর্থিক সাহায্য করতে পারে। অস্বচ্ছতার প্রশ্নে তিনি বলেন, “বহু দূর পর্যন্ত আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ ভিত্তিতে লিস্ট জমা দিয়েছিলাম বিডিওকে। কিন্তু বিডিও আমাদের কথা না শুনে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দেওয়া লিস্ট অনুযায়ী ত্রাণ বন্টন করছে।’
যদিও তৃণমূলের তরফে পালটা বলা হয়েছে, এই তিনটে দলই বাংলার মানুষের শত্রু। এতদিন এরা বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। এখন এরা মানুষের বিপর্যয় নিয়েও রাজনীতি করতে নেমে পড়েছেন। এর থেকে লজ্জার আর কিছু হয় না। তৃণমূলই মানুষের পাশে বরাবর ছিল, আছে এবং থাকবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584