খুপড়ি ঘর থেকে শিক্ষিকা হবার স্বপ্ন দেখছে হার না মানা কল্যাণী

0
135

পিয়া গুপ্তা ,উত্তর দিনাজপুরঃ

খুপড়ি ঘরে বসবাস করে অভাবী সংসারে ঠিকমতো দু’বেলা ভাত জোটেনি, কখনও জোটেনি ভাল পোশাক। প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়ানোর বা নতুন বই কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না কল্যাণীর  অভিভাবকের।
তবুও দারিদ্রতার কাছে হার মানেনি কল্যাণী বর্মনের ইচ্ছে শক্তি।
কালিয়াগঞ্জ পার্ব্বতী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের  উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কলা বিভাগ থেকে এবার ৪৭৬ নম্বর পেয়ে দারিদ্র্যতাকে হার মানিয়ে আজ স্বপ্ন  পূরণে এগিয়ে যেতে চায় কল্যাণী ।

নিজস্ব চিত্র

কালিয়াগঞ্জ ব্লকের  অধীনে শেরগ্রাম গ্রামের কৃষিজীবি পরিবারের মেয়ে কল্যাণী ।বাবা জগদীশ   বর্মন কৃষিকাজ  করেই দুই ছেলে মেয়েকে বড়ো করার জন্য দিনরাত্রি পরিশ্রম করে চলছেন।
জগদিশ বাবু  জানান, তার মেয়ে কল্যাণী পড়ালেখায় খুব ভাল। কোন প্রাইভেট দেয়ার সামর্থ্য হয়নি। অভাবের সংসার। ঘরে বসেই মায়ের সঙ্গে সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করেছে সে। তার ইচ্ছে আরও পড়াশোনা করে অনেকদূূর এগিয়ে যাওয়া। বাবা-মায়ের স্বপ্নও তাই। তবে দারিদ্র্যতা তাদের স্বপ্নের কাছে যেন বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাবা জগদিশ বর্মন  জানান, কল্যাণী  নিজের আগ্রহ ও মেধার ভিত্তিতে অর্জন করেছে এ সাফল্য। মেয়ের সাফল্যে অনেক আনন্দের মধ্যে থাকলেও ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত অভাবী পিতামাতা। কারণ অভাবের কারণে এখন তার পরিবার কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে কল্যাণীকে । কৃষিজীবি পরিবারের মেয়ে হবার কারণে কল্যাণীকে  ভোরে  উঠেই সংসারের কাজ করে কিছুক্ষণ পড়াশুনা করেই বাবার সাথে  মাঠের কাজেও নেমে পড়তে হয় ।

নিজস্ব চিত্র

তবুও সব কিছুর মধ্যে সে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে এবার তার শুধু পরিবার নয গ্রামের মুখ ও উজ্বল করেছেন ।
কল্যাণীর মা জানান
অভাবের সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে লেখাপড়া চালিয়ে যেত কল্যাণী । দরিদ্রতাকে জয় করে কল্যাণীর  এগিয়ে চলায় তাই পিতা-মাতা দারুনখুশি।  ভাল ফলাফলের পরেও মেধাবী কল্যাণীর  মনে এখন শুধু উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।কল্যাণী তার পরিবারের  বড় মেয়ে । কল্যাণীর ইচ্ছে আগামী দিনে শিক্ষকতা করেই তাদের গ্রামের  ছোটো ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলা।তবে কল্যাণীর বাবা জগদিশ বর্মনের এখন একটাই চিন্তা হানা দিচ্ছে কৃষিকাজ করে কি পারবেন মেয়ে কে ভালো কলেজে পড়াতে ?কল্যাণীর উচ্চশিক্ষার  স্বপ্ন পূরণ হবে কি?

নিজস্ব চিত্র

যদিও মেয়ের বিদ্যালয় ও পরিচালন সমিতি  থেক আশ্বাস দিয়েছে কল্যানীর যেখানেই পড়া শোনা করবে তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবেন।তবুও ভবিষ্যতে কল্যাণীর পড়াশুনা নিয়ে   দুশ্চিন্তা যেন এখনো কাটেনি জগদীশ বাবুর।মেয়ে কে উচ্চশিক্ষিত করে তোলাই এখন জগদীশ বাবুর স্বপ্ন ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here