পাঁচ হাসপাতাল ঘুরে অক্সিজেনের অভাবে রাস্তাতেই মৃত্যু একরত্তির

0
104

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

করোনা আতঙ্কে লক ডাউনের মধ্যেই এক চূড়ান্ত এক অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। করোনা আক্রান্ত না হয়েও চিকিৎসকদের করোনা আতঙ্কে তাঁর চিকিৎসা জুটল না।

dead | newsfront.co
বিচ্ছেদ বেদনায় হাহাকার। নিজস্ব চিত্র

সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত শহরের ৫টি হাসপাতাল রাজপথেই অক্সিজেনের অভাবে থেমে গেল সেই শিশুর জীবন। মর্মান্তিক এই ঘটনার জন্য শিশুটির মৃত্যুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে ৫টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও।

dead at road | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

এমনিতেই অসুস্থ কেউ শুনলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইছেন না অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা। তার মধ্যেও একজনকে রাজি করিয়ে অসুস্থ শিশুটিকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতালে দৌড়ে বেড়ালেন আড়াই মাসের শিশুটির মা-বাবা।

আরও পড়ুনঃ  করোনার চিকিৎসা নিয়ে জুনিয়র ডাক্তার, স্থানীয়দের বিক্ষোভে উত্তাল বাঙুর, সাগরদত্ত হাসপাতাল

জানা গিয়েছে, বাটানগরের বাসিন্দা শরফুদ্দিন খানের আড়াই মাসের নাতি নিউমোনিয়ায় ভুগছিল। প্রথমে সে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে ভর্তি ছিল। কিন্তু বুধবার শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। পাশাপাশি শিশুটি করোনায় আক্রান্ত কিনা তা দেখার জন্য তার লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়।

এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে শরফুদ্দিন এবং শিশুটির মা ও বাবা রওনা দেন এসএসকেএম হাসপাতালের পথে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন সেখানে বেড নেই, তাই ভর্তি নেওয়া যাবে না। সেখান থেকে এরপর তাঁদের পাঠানো হয় ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে। কিন্তু সেখানেও বেডের অভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সেখান থেকে তাঁরা আসেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও ঠাঁই হয়নি তাঁদের। এরপর ফের ফিরে আসেন এসএসকেএমে। কিন্তু তখনও বেড না থাকায় সেখানেও ভর্তি করাতে পারেননি। এরপর শিশুটিকে নিয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্বারস্থ হয় পরিবার। কিন্তু সেখানে পৌঁছে শিশুটিকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, অক্সিজেনের অভাবে রাস্তাতেই সে মারা গিয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার করে বলে দিয়েছেন কোন রোগীকে রেফার করা যাবে না সেখানে করোনা মহামারীর সময়ে নিছক বেডের অভাব নাকি দায় এড়ানো মনোভাব, কি কারনে শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হল না, সেই নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

পরিবার দাবি করেছে, অ্যাম্বুলেন্স চালক প্রথমে যেতেই চাইছিলেন না, তারপর রাস্তা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স চালাননি। ফলে সঙ্গে থাকা অক্সিজেন ও শেষ হয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স চালক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here